জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলো এখন মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের আস্তানা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, আন্তর্জাতিক মহল থেকে যে ধরনের চাপ মায়ানমারের উপর প্রয়োগ করা প্রয়োজন, সেই চাপ আমরা লক্ষ্য করছি না। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি চীনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে ভারতের সঙ্গেও আমরা আলাপ আলোচনা করেছি। তারাও মিয়ানমারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। আমরা আশা করছি এ সমস্যার সমাধান হবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালেও সব রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে পারেনি। বিএনপি একানব্বই সালে যেমন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারেনি, এর আগে ৭৬-৭৭ সালে যখন এসেছিল তখনও সব রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে পারেনি। তখনকার হাজারো রোহিঙ্গা এখনও বাংলাদেশে রয়ে গেছে। তারা নিজেরাই যখন ক্ষমতায় ছিল তখন এ সমস্যার সমাধান সঠিকভাবে করতে পারে নাই।
এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) উদ্যোগে আয়োজিত ‘জেনোসাইড অ্যান্ড জাস্টিস: বাংলাদেশ’জ রেসপন্স টু দ্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সেখানে তিনি সকল নাগরিক অধিকার ও মর্যাদাসহ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজে দেশে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে সহায়তা দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান এই সেমিনার উদ্বোধন করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবিলম্বে দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কার্যকর উপায় বের করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের সভাপতিত্বে সেমিনারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি ছিলেন।
এ ছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমান, ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি জোহান্স ভ্যানদার ক্ল্যাও, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এয়ার কমডোর (অব.) ইশফাক এলাহী চৌধুরী, মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিপিজে (গবেষণা) এর পরিচালক ড. এম সঞ্জীব হোসেন প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক জামিলা এ চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য দেন।