মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ০৫ সেপ্টেম্বর।
মানিকগঞ্জের ঘিওরে সম্পত্তি লিখে নিয়ে মা রহিতন বেগম (৮০)কে ছাগলের ঘরে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে বেদেনা বেগমও আংগুরি বেগম নামের দুই মেয়ের বিরুদ্ধে। মায়ের নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে সোমবার দুপুরে ঘিওর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের স্বীকার ৮০ বছরের বৃদ্ধা রহিতন বেগমের বড় মেয়ে মমতাজ বেগম। তবে পুলিশ বলছে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৪০ বছর আগে রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ভাটরাকান্দি এলাকার ২ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক মোসলেম উদ্দিন। তবে যারা যাওয়ার আগে স্ত্রী রগিতন বেগমের নামে ১৬৫ শতাংশ সম্পত্তি লিখে দিয়ে দেন। এর মধ্যে ৬৭.৮৭ শতাংশ জমি দুই ছেলে ও এক মেয়ে লিখে দেন। চাকুরীর সুবাদে দুই ছেলে শহরে ও বড় মেয়ে শ্বশুর বাড়ি সংসার করায় বৃদ্ধা মায়ের কাছে বাবার বাড়িতে স্বামীকে নিয়ে বাবা বসবাস করেন বেদেনা বেগম ও আংগুরি বেগম। কিন্তু মা বৃদ্ধা ও অসুস্থ্য হওয়ায় কৌশলে ২০২১ সালে মায়ের নামের ৯৭.১৩ শতাংশ সম্পত্তি লিখে দেন মেয়ে বেদেনা বেগম ও আংগুরি বেগম।
রহিতন বেগমের বড় মেয়ে মমতাজ বেগম জানান, আমার ছোট বোন বেদেনা ও তার স্বামী রেজাউল করিম এবং আংগুরি ও তার স্বামী আনিসুর রহমান মাকে নির্যাতন করে ও মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে মায়ের সম্পত্তি লিখে নিয়েছে। সম্পত্তি লিখে নেওয়ার পর থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে মাকে নির্যাতন করে আসছে। মাকে ঠিকমতো খেতেও দেয় নাই, এমনকি মাকে ওরা না খেতে দিয়ে ছাগলের ঘরে ছাগলের সাথে রাখছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে মাকে আমাদের কাছ নিয়ে যেতে চেয়েছি কিন্তু বোন ও বোন জামাই দেয় নাই। উল্টো আমরা বাবার বাড়িতে গেলে আমাদের সাথে দুব্যবহার করতো।
প্রতিবেশী সামেলা বেগম জানান, রহিতন বেগম দিনে ও রাতের বেলায় ক্ষুধার যন্ত্রনায় কান্নাকাটি করতো। মাঝে মধ্যে আমরা আশপাশের লোকজন খাবার দিতে আসতাম। কিন্তু বৃদ্ধার মেয়ে ও মেয়ের জামাইয়ের খারাপ ব্যবহারের কারনে আর খাবার দেতাম না। ক্ষুদার যন্ত্রনায় চিৎকার বা কান্না কাটি করলে রগিতন বেগমকে তার মেয়েরা বকাবকি করতো এবং মারধর করতো। এসব নিয়ে স্থানীয়ভাবে ও থানায় বেশ কয়েকবার বিচার হয়েছে কিন্তু তার পরও মেয়ে ও মেয়ের জামাইরা পাল্টাই নাই।
রহিতন বেগমের ছোট ছেলে দেলোয়ার হোসেন জানান, মাকে আমাদের কাছে আনার জন্য একাধিকবার বোন ও বোন জামাইকে অনুরোধ করেছি। স্থানীয় ও থানায় একাধিকবার বসা হয়েছিল। তারপরও ওরা মাকে নির্যাতন বন্ধ করে নাই। মায়ে না খেতে দিতে, ছাগলের ঘরে রেখেছে। ছেলে হয়ে চোখের সামনে মাকে ধূকেধূকে মরতে দেখছি, কিন্তু কিছুই করতে পারছিনা। প্রশাসনের ও স্থানীয়দের মাধ্যমে আমাকের আমাদের কাছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। আপনারা আমার মাকে বাঁচান।