এস এম আকরাম হোসেন :
মানিকগঞ্জে চাদাঁ না দেয়ায় ভূমি কর্মকর্তা কে এম ফিরোজ এর সহযোগীতায় স্থানীয় প্রভাবশালী মোস্তাফার বিরুদ্ধে গ্রীস প্রবাসী সায়েম খান এবং ফ্রান্স প্রবাসী হোসেন খানের দোকান ঘর ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত ১৯ আগস্ট দুপুরে সদর উপজেলার বলড়া বাজারের ভাড়াড়িয়া বাজার অংশে এই ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। মোস্তফা বলড়া এলাকার কুতুমদ্দিনের ছেলে এবং ভূমি কর্মকর্তা কে এম ফিরোজ ভাড়াড়িয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা। সায়েম খান ও হোসেন খান বলড়া এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় গ্রীস প্রবাসী সায়েম খান এবং ফ্রান্স প্রবাসী হোসেন খানের মা জহুরা বেগম গত ২০ আগস্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই সাথে সায়েম খান ফ্রান্সের বাংলাদেশ দূতাবাসে গত ২৩ আগস্ট তার সম্পত্তি রক্ষার্থে আইনি সহায়তা চেয়ে লিখিত আবেদন করলে দূতাবাস ২৩ আগস্ট ১১৪ নং স্মারকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থ্যান মন্ত্রনালয়কে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জানানো হয়। পরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থ্যান মন্ত্রনালয় আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য ২৩ আগস্ট ১৫০ নং স্মারকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে ।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার ভাড়াড়িয়া মৌজার আরএস ৬৭৯ নং খতিয়ানের ২৮৪৬ নং দাগের ৮ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন রমনী মোহন পোদ্দার । তিনি মারা যাওয়ার পর তার ওয়ারিশ হিসেবে তার পুত্র রামকৃষ্ণ পোদ্দার গ্রীস প্রবাসী সায়েম খান এবং ফ্রান্স প্রবাসী হোসেন খানের নিকট ৫৫৪৭/২২ নং দলিলের মাধ্যমে ২ শতাংশ জমি বিক্রয় করেন। পরে সায়েম খান ও হোসেন খান নামজারি ও জমাভাগ কেস নং ২১০৪/২২-২৩ মূলে মালিক হয়ে খাজনাদি পরিশোধ করে ভোগদখল করেন। উক্ত জমিতে সিমেন্টের খুঁটি ও কাঠের পাটাতন দিয়ে ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে দোকান ঘর নির্মান করেন। এ সময় স্থানীয় প্রভাবশালী মোস্তফা দুই লক্ষ টাকা চাদাঁ দাবী করেন । চাদাঁ না দেয়ায় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ১৯ আগস্ট দুপুরে ১০/১৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে ভাংচুর করেন। স্থানীয়রা বাধাঁ দিতে গেলে ভূমি কর্মকর্তা ফিরোজ জানায় কোর্টের অর্ডার আছে । কোর্টের অর্ডারের নোটিশ দেখানোর জন্য বলা হলে প্রবাসী দ্বয়ের পরিবারে লোকজনকে ভয়ভিতি দেখালে আর কেউ বাঁধা দেয়নি।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী জহুরা বেগম জানান, চাদাঁ না দেয়ায় তাদের দোকান ঘর অন্যায়ভাবে ভাংচুর করেছে । তিনি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন । প্রশাসন এর সুষ্ঠু বিচার করবেন এমনটাই দাবী জানান তিনি ।
এ বিষয়ে বলড়া বাজার বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম জানান, সায়েম খান রেকর্ডিয় মালিকের নিকট থেকে জমি কিনে দোকানঘর নির্মান করেছিলো। কিন্তু ভূমি কর্মকর্তা এবং মোস্তফা লোকজন নিয়ে এসে এভাবে ভাংচুর করেছে তা ঠিক হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তফা বলেন, সায়েম খান যেখানে দোকান তুলছিল সে জায়গা সরকারি খাস জায়গা। ভূমি কর্মকর্তা ফিরোজের সাথে ভাল সম্পর্ক থাকায় আমাকে সাথে নিয়ে বাধাঁ দিতে গিয়েছিল। এ সময় ভাংচুর যারা করেছে তাদের তনি চিনেন না বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভূমি কর্মকর্তা কে এম ফিরোজ বলেন, প্রবাসী সায়েম খানের পরিবার যেখানে দোকান নির্মান করেছেন সে যায়গাটা সরকারি খাস জায়গা। খবর পেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে পুলিশ প্রশাসনকে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বাধা দেয়া হয়। পরে কে বা কারা তাদের দোকান ভাংচুর করেছে তা তিনি জানেন না বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা জোত্যিশ^র পাল জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। তদন্ত চলমান রয়েছে । তদন্তের পর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।