একাধিক গবেষণার তথ্য বলছে, শীতকালে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালে নিম্ন তাপমাত্রা রক্তনালী সংকুচিত করে। এতে অভ্যন্তরীণ রক্তচাপ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে রক্তের অভ্যন্তরীণ কিছু জৈব-রাসায়নিক পরিবর্তনও ঘটে। এ কারণে রক্তনালিতে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
তাই আগে থেকেই যাদের রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার প্রবণতা আছে, তাদের রক্ত জমাট বেঁধে থ্রম্বসিস বেশি ঘটে। আর এই থ্রম্বসিস বা জমাট রক্ত বাঁধার ঘটনা যখন হার্টের করোনারি আর্টারিতে হয়, তখন হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে যা উপেক্ষা করা উচিত নয়। বুকে ব্যথা, বুকে বাম দিকে চাপ অনুভূত হওয়া, চোয়ালে ব্যথা, বমি-বমি ভাব, মাথা ঘোরা ও ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দিলে তৎক্ষণা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা শীতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াতে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে কিছু লাইফস্টাইল টিপস মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।
আপনার যদি হার্টের সমস্যা প্রথম থেকেই থাকে, তাহলে এই ঋতুতে আপনার আরও সচেতনতা প্রয়োজন। শীতবস্ত্র ব্যবহার করুন। শরীরকে বাইরের তাপমাত্রা থেকে রক্ষায় টুপি, সোয়েটার, মাফলার ব্যবহার করুন।
শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ফিট থাকতে রোজ যোগব্যায়াম করুন। এতে হার্টও ভালো থাকে।
শীতের মৌসুমে নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করান। রক্তচাপ বাড়লে হৃদরোগের সম্ভাবনাও বাড়ে। তাই এই দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি।
সুষম আহার করুন। শীতে মৌসুমি সবজি ও ফল বেশি করে খান। এই সময় বাজারে পালং শাক, গাজর, ব্রকোলি, কমলালেবু, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেরি, আপেল ইত্যাদি ফল ও সবজি পাওয়া যায়। সেগুলো খান। এছাড়াও গোটা শস্য ডায়েটে রাখুন। জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত মশলাদার খাবার, প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
শীত মৌসুমে একসঙ্গে অতিরিক্ত খাবার খাবেন না। কেননা বেশি পরিমাণে খাবার খেলে তা হজমের জন্য আপনার পরিপাকতন্ত্রে অধিক রক্তপ্রবাহের প্রয়োজন হবে। ভারী খাবার খেয়ে বাইরের ঠান্ডা পরিবেশে গেলে শরীরের পক্ষে এ চাহিদা পূরণ করা কঠিন। তীব্র ঠান্ডায় রক্তনালীর সংকোচন, হার্টের পাম্পিং প্রসেসে কাঠিন্য ও পাকস্থলিতে প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহে ব্যর্থতা- সবকিছু একত্রে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
সুস্থ থাকতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে ধূমপান ত্যাগ করুন। পাশাপাশি অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলুন।
বাড়িতে কক্ষের তাপমাত্রা উষ্ণ রাখুন। আপনি যে প্রধান কক্ষগুলো ব্যবহার করেন তা কমপক্ষে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গরম করুন।
শীত মৌসুমে অতিরিক্ত পরিশ্রম করা এড়িয়ে চলুন।
শীতকালে অতিরিক্ত ঘুমের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। গবেষণায় অতিরিক্ত ঘুমের সঙ্গে হৃদরোগের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া