স্টাফ রিপোর্টার, সিংগাইর:
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে সিংগাইর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেনের বিরুদ্ধে।এদিকে,স্থানীয়দের বিরুদ্ধে জোড় করে তার জায়গার ওপর দিয়ে রাস্তা নেয়া,রড সিমেন্ট চুরি,চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলে থানায় অভিযোগ করেছেন তিনি। এতে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়,সিংগাইর পৌর এলাকায় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স রোডের ফায়ার সার্ভিসের উত্তর পাশে ঘোনাপাড়া গ্রামের ওই রাস্তাটি বন্ধ করায় তিন গ্রামের সাধারণ জনগন ও একটি বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এবিষয়ে এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে স্থানীয়রা জানান। উল্টো অভিযোগকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি ও মিথ্যা মামলা দেওয়ার পায়তারা চলাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, সিংগাইর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের ঘোনাপাড়া-বকচর গ্রামের সংযোগের রাস্তাটি দিয়ে দীর্ঘ ২০-২৫ বছর যাবৎ সাধারণ মানুষ ও একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে আসছে। ওই রাস্তার পাশের একটি জমি ক্রয় করেন বলধারা ইউনিয়নের পারিল গ্রামের বিএনপির নেতা আওলাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি। জমিটি ক্রয় করার পর আওলাদ হোসেন দীর্ঘ দিনের চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে একটি ভবন নির্মাণ শুরু করেন। এতে ভোগান্তিতে পরে কয়েকটি গ্রামের হাজার খানেক সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া গোবিন্দল-ঘোনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই । রাস্তাটি বন্ধ করায় প্রায় ১ কিলোমিটার ঘুরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, এই রাস্তা দিয়ে আমরা সহজে স্কুলে আসা-যাওয়া করতাম। রাস্তাটি বন্ধ করাই খুবই অসুবিধা হচ্ছে। রাস্তাটি পুনরায় উদ্ধার করে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানাই প্রশাসনের কাছে।
গোবিন্ধল-ঘোনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটি বন্ধ করায় তিন গ্রামের শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পরেছে। ওই রাস্তা দিয়ে বকচর, বিনোদপুর ও নয়াপাড়া গ্রামের শিক্ষার্থীরা সহজে স্কুলে আসা-যাওয়া করতো। রাস্তাটি বন্ধ করায় শিক্ষার্থীদের চরম অসুবিধা হচ্ছে।
স্থানীয় আখতারুজ্জামান সোহেল বলেন, রাস্তাটি সচল রাখার জন্য এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষর দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছিনা। উল্টো আমাকেসহ অভিযোগকারীদের ভয়ভীতি ও মিথ্যা মামলা দেওয়ার পায়তারা করছেন প্রভাবশালী আওলাদ হোসেন।
এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা স্বীকার করে আওলাদ হোসেন বলেন, আমার জায়গা দিয়ে কি করণে আমি রাস্তা দেব। রাস্তা নিলে আমার সাথে সমঝোতা করে নিতে হবে।
পৌর মেয়র আবু নাঈম মোঃ বাশার বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফিট রেখে কাজ করতে হবে সে নাকি সেটিও করেনি। পৌরসভা থেকে চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গণস্বাক্ষরসহ একটি অভিযোগ পেয়েছি। এবিষয়ে তদন্ত চলছে। খুব দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যই যেটা সহজ সেটাই করে দিবো।