স্টাফ রিপোর্টার:
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেছেন, কমিউনিটি ক্লিনিক সেবার কারণে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে এখন ৩০ রকমের বিভিন্ন ঔষধ বিনামূলে দেওয়া হচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের কারণে শিশু মৃত্যুর হার কমেছে, প্রসুতি মৃত্যুর হার কমেছে। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে।
রবিবার দুপুরে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতাল মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, গ্রামীণ পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেন। দেশে এখন ১৪০০ কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে আরো ৪হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মানের কাজ চলছে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিকভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। এতে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের দ্বিতীয় দফায় আবারো শেখ হাসিনার সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করে স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোড়গোড়ায় নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, নতুন করে যেসব কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হচ্ছে সেগুলো আরো আধুনিকভাবে করা হচ্ছে। সেগুলোতে দুইটি রুমের স্থলে চারটি করে রুম করা হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য,শিক্ষা, রাস্তাঘাট, গ্রামীন অবকাঠামোসহ সকল সেক্টরের উন্নয়ন করেছেন। স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে এখন বিদ্যুৎ পৌছে গেছে। অতীতে মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫০ বছরের নিচে। এখন গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭২ বছর। দারিদ্রের হার ৮০ ভাগ থেকে নেমে এখন হয়েছে মাত্র ১০ ভাগ। আগে গ্রামে গ্রামে বাড়িতে প্রসুতির ডেলিভারী হতো। এখন কমিউনিটি ক্লিনিকে হচ্ছে। এতে প্রসুতির মৃত্যুর হার কমেছে। নবজাতক মৃত্যুর হার কমেছে। অতীতে ১৫০ ( লাখে) ভাগ প্রসুতির মৃত্যু হতো। তা এখণ কমে হয়েছে ৪০ ভাগ।আর শিশু মৃত্যুর হার ৬০০ থেকে কমিয়ে এখন ১৭০ ভাগ হয়েছে। শুধুমাত্র ৭০ এ নামিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, সুস্থ্য জাতি সুস্থ্য সুন্দর দেশ গঠন করতে পারে। তাই জাতিকে সুস্থ্য থাকতে হবে। তিনি বলেন, মানিকগঞ্জসহ সারাদেশের স্বাস্থ্যসেবার প্রভুত উন্নয়ন হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলো আধুনিকীকরণসহ উন্নত যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমানে ঔষধ দেওয়া হচ্ছে। জেলা হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন ২০০’শ ওপরে মানুষ চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে। জেলা ও উপজেলা হাসপাতালের পাশাপাশি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রেরও উন্নয়ন করা হচ্ছে। দেশে বর্তমানে ১৫ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডায়াবেটিস হাসপাতাল স্থাপন করা হচ্ছে। ডায়াবেটিস রোগীরা ওইসকল হাসপাতালে উন্নতর চিকিসাসেবা গ্রহন করতে পারবে।
মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন ডা. মোঃ আনোয়ারুল আমিন আখন্দের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মোঃ আকতারুজ্জামান, জেলা প্রশাসক এস, এম ফেদৌস, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম, মানিকগঞ্জ জেলা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোঃ আবদুল আওয়াল, জেলা ডায়াবেটিস হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক আফম সুলতানুল আজম খান আপেল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা, সাবেক পৌর মেয়র মোঃ রমজান আলীসহ চিকিসক ও নার্সগন উপস্থিত ছিলেন।