স্টাফ রিপোর্টার :
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযাগে এনে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা।
মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সুদেব কুমার সাহা বলেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের আপন ফুফাতো ভাই মো. ইসরাফিল হোসেন সদর উপজেলা পরিষদের দুইবার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। আসন্ন তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি তার ভাইয়ের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে দলীয় পদ থাকবে না বলে বিভিন্ন ফোরামে দলীয় পদধারী নেতা-কর্মীদের ধমকও দিচ্ছেন। প্রতিনিয়ত দলের বিভিন্ন ফোরামকে ডেকে তার ফুফাতো ভাইয়ের পক্ষে কৌশলে প্রভাব বিস্তার করছেন। একজন সংসদ সদস্য হওয়ার পরও উপজেলা নির্বাচনে একজন প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি অবস্থান নেওয়ায় দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে সমালোচনাসহ নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে নির্দলীয় নির্বাচন হলেও দলীয় নেতা-কর্মীদের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে এবং নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গত সোমবার (৬ মে) সদর উপজেলায় গড়পাড়া এলাকায় শুভ্র সেন্টারে উপজেলার ঈমাম, মোয়াজ্জিন, মাদ্রাসা শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের নিয়ে সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসরাফিল হোসেনের পক্ষে সভা করেন। সেখানে তিনি আপত্তিজনক ও সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ফলে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সংখ্যালঘুদের মাঝে অনাস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। তাছড়া কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে নির্বাচনের পূর্বে সরকারি প্রকৌশলীকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের আশ্বাস দিচ্ছেন। যা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। বর্তমান জনপ্রতিনিধি ও সাবেক জনপ্রতিনিধিদের ডেকে এমপি তার আপন ফুফাতো ভাইয়ের পক্ষে কাজ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। এতে জনপ্রতিনিধিরা অসহায় বোধ করছেন।
সুদেব কুমার সাহা বলেন, শুধু তাই নয়, জনপ্রতিনিধিদের দলীয় এমপি জাহিদ মালেক তার প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যে সকল মাদ্রাসা শিক্ষক নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন তাদেরকে ইসরাফিল হোসেনের পক্ষে কাজ করার জন্য বলেছেন। এটিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এমপির হস্তক্ষেপের কারণে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংশয় রয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সুদেব কুমার সাহা আক্ষেপ করে বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ সদর, পৌরসভার ও সাটুরিয়ার কয়েকটি ইউনিয়নে তার নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করেছি। তার জন্য দীর্ঘ ৩৫ বছর কষ্ট করেছি। বিগত ৫টি জাতীয় নির্বাচনে তাকে জয়ী করার জন্য নিরলস কাজ করেছি। আজকে উপজেলা নির্বাচনে তার ভাইয়ের বিপক্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি বলে সংসদ সদস্য আমার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক কথা বলেন এবং অবমূল্যায়ন করেন। আমি জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। চেম্বার অব কমার্সের তিনবারের সভাপতি ছিলাম। জেলা আওয়ামী লীগের দুই বারের সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা ক্রীড়া সংস্থার দুইবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এতোগুলো পদ-পদবি থাকার পরও একজন সংসদ সদস্যর কাছ থেকে এমন কথা সমীচীন নয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে সুদেব সাহার সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।