দেওয়ান সাদমান শাওন, স্টাফ রিপোর্টার :
মানিকগঞ্জের গড়পাড়া ইমাম বাড়ির তাজিয়া মিছিলের শতবর্ষের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য।
তাজিয়া মিছিল এর ইতিহাস-মানিকগঞ্জের গড়পাড়া উপজেলায় অবস্থিত ইমাম বাড়ি। ১৯২১ সালে আব্দুর রহমান লাল মিয়া প্রতিষ্ঠা করেন ইমাম বাড়ি। আব্দুর রহমান লাল মিয়া ভারতের বিহারে ভাগলপুরের হযরত শাহ সৈয়দ ইমদাদ আলীর কাছে মুরিদ হন। পরবর্তীতে হযরত শাহ সৈয়দ ইমদাদ আলী বাংলায় তাজিয়া বা শোক মিছিল বের করার শর্তে তার মেয়েকে আব্দুর রহমান লাল মিয়ার কাছে বিবাহ দেন। পরবর্তীতে ১৯২৪ সালে প্রথম বের হয় তাজিয়া মিছিল বা শোক মিছিল।মিছিলটি বের হয়ে মানিকগঞ্জে প্রবেশ করেন। ধীরে ধীরে এটি জনপ্রিয়তা পেতে থাকেন এবং দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসতে থাকেন।এই তাজিয়া মিছিলটি এইবার শতবর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে।
ইমাম বাড়ির মহরমের কার্যক্রম-পহেলা মহরম ফজরের নামাজের পরে জারি,মার্সিয়া,মাতম,দরুদ পাঠ,দোয়া করা হয়।এর পরে অনুমতিপত্র নিয়ে ৩০টি দল দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়।এই ৩০টি দল টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী,ফরিদপুর,পাবনা,রাজবাড়ী,গোয়ালন্দ,ধামরাই সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চলে যায় কারবালার ইতিহাস জানাতে। জারি,মার্সিয়া,মাতম এর মাধ্যমে তারা কারবালার ইতিহাস জানানোর চেষ্টা করে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষদের।১০ই মহরম দলগুলো সকালে ইমাম বাড়ি ফিরে আসে।এরপরে যোহরের নামাজ শেষে দোয়া-দরুদ পাঠ করে ইমাম বাড়ি থেকে ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল বের হয়ে মানিকগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। শহরের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে ইফতার এবং মাগরিব এর নামাজ শেষে কলেজ মাঠে শোক সভা হয়।
জনসমাগম-প্রথম মহরম থেকে শতাধিক ভলেন্টিয়ার ইমাম বাড়িতে স্বেচ্ছাসেবী কাজ করে যাচ্ছেন।মিছিলের প্রস্তুতি,সাজসজ্জা সহ আনুষাঙ্গিক কাজ করে যাচ্ছে শতাধিক ভলেন্টিয়ার। ১০ই মহরম ৫০ হাজার মানুষের একটি মিছিল বের হয়।মিছিলটির আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সাথে ২০০০(দুই হাজার) ভলেন্টিয়ার কাজ করেন।এর মাঝে পাচ শতাধিক হিন্দুধর্মাবলম্বীরা ভলেন্টিয়ার হিসেবে কাজ করেন। মিছিলটিতে প্রায় পনের শত হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা অংশগ্রহণ করেন।
দায়িত্ব পালন-বর্তমানে আব্দুর রহমান লাল মিয়ার ৪র্থ প্রজন্ম ইমাম বাড়ির দায়িত্ব পালন করছেন। শাহ পীর তাজিনুর রহমান, শাহ আরিফুর রহমান বাবু, শাহ শাহাজাদা রহমান বাধন ইমাম বাড়ির দায়িত্ব পালন করছেন।