স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জ সদরের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের ভাড়ারিয়া এলাকায় বালু ব্যবসার দ্বন্দে কয়েকজনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া সদরের ভাড়ারিয়া বাজারের ও হরিরামপুরের বলড়া বাজারের কয়েকটি দোকান ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। পরে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ পাঁচজনকে আটক করে।
বুধবার বিকেল থেকে মানিকগঞ্জ সদরের ভাড়ারিয়া ও হরিরামপুর উপজেলার বলড়ায় থেমে থেমে রাত নয়টা পর্যন্ত হামলার ঘটনাও ঘটে বলে মানিকগঞ্জ সদর থানা ওসি এস এম আমানউল্লাহ জানিয়েছেন।
বালু ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব একসময় এলাকাবাসীর দ্বন্দ্বে রুপ নেয়। একশ মিটার দূরত্বের পাশাপাশি দুটি বাজারে রাতেই বলড়া এলাকাবাসী বলড়া বাজারে অবস্থান নেয় এবং ভাড়ারিয়া গ্রামবাসী ভাড়ারিয়া বাজারে অবস্থান নেয়। বুধবার রাতেই সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। এসময় হরিরামপুর থানা ওসি মুমিন খান ও মানিকগঞ্জ সদর থানা ওসি এস এম আমানউল্লাহ ঘটনাস্থলে আসেন।
হামলায় ভাড়ারিয়া এলাকার সোনা মিয়ার ছে ািম আহমেদ (২৫) ও মৃত ইসমাইল মোল্লার ছেলে জয়নাল আবেদিন (৩০) কে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে বলড়া এলাকার লোকজন। এছাড়া হামলায় সালমান, সায়মন ও ইউসুফ আলী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ইব্রাহিম মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এবং জয়নাল আবেদীন ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, সাবেক ছাত্রদল নেতা আনোয়ার হোসেন আনু, নজরুল ইসলাম, রনি মিয়া, তুহিন ও রায়হান।
স্থানীয়রা জানান, ভাড়ারিয়া এলাকার সোহাগের আনলোড ড্রেজারের একটি যন্ত্র (হ্যান্ডেল)নিয়ে আসে হরিরামপুরের বলড়ার বাসিন্দা ও বলড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু ও ভাড়ারিয়ার রনি ও সুৃমন।
এ ঘটনায় বিকেলে ভাড়ারিয়ার মালাকার মোড়ে সোহাগের সাথে আনোয়ার, রনি, বুলবুল, সুমনসহ কয়েকজনের সাথে বাক বিতন্ডা হয়। পরে সোহাগের লোকজন আনোয়ার ও রনিসহ কয়েকজনকে মারধর করে। মারধরের জের ধরে বলড়া এসে আনোয়ার তার এলাকার লোকজনকে নিয়ে ভাড়ারিয়া বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ও কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে।
হামলায় ভাড়ারিয়া এলাকার সোনা মিয়ার ছেলে ইব্রাহিম আহমেদ (২৫) ও মৃত ইসমাইল মোল্লার ছেলে জয়নাল আবেদিন(৩০) কে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে কোপালে গুরুতর আহত হয়। এছাড়া হামলায় সালমান, সায়মন ও ইউসুফ আলী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ইব্রাহিম মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এবং জয়নাল আবেদীন ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এসময় ভাড়ারিয়া বাজারের ইদ্রিস আলীর ভাই ভাই স্পোর্টস কর্ণার, ইউসুফ আলীর সুফিয়ান ফার্মেসি ও ইউসুফ আলী (বড়) আয়েশা আ মেটকস এর দোকা ভাংচুর করা হয়েছে। পরে ভাড়ারিয়া এলাকার লোকজনও বলড়া বাজারের সালামের ওষুধের দোকানসহ কয়েকটি দোকানের সার্টার ভাংচুর করে।
সোহাগ মিয়া বলেন, বলড়ার আনোয়ার হোসেন আনু, ভাড়ারিয়ার রনি, সুমনসহ কয়েকজন গতকাল তিনটার দিকে বালিরটেক সেতু সংলগ্ন কালিগঙ্গা নদীর পারের আনলোড ড্রেজারে গিয়ে চাঁদা দাবি করে আনলোড ড্রেজারের হ্যান্ডেল (হাতল) নিয়ে যায় । পরে ড্রেজারের লোকজনসহ আমি হ্যান্ডেল নিতে ভাড়ারিয়ার মালাকার মোড়ে যাই। তারা হ্যান্ডেল না দিলে আমার লোকজনের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। পরে বিকেলের বাকবিতন্ডার জেরে আনু ভাইসহ সুমন ও রনিরা ভাড়ারিয়া বাজারের নিরীহ দোকানদের দোকানে হামলা ও ভাংচুর করে। ইব্রাহিম ও জয়নালকে কুপিয়ে জখম করে তারা। একজনের মাথায় ১৭ টির মতো সেলাই হয়েছে। আরেকজনের হাত বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো অবস্থা। এসময় ইদ্রিস আলীর ভাই ভাই স্পোর্টস কর্ণার, ইউসুফ আলীর সুফিয়ান ফার্মেসি ও ইউসুফ আলী (বড়) আয়েশা আবেদ কসমেটিকস এর দোকান ভাংচুর করে তারা। পরে আমার এলাকার লোকজনও ভাড়ারিয়া বাজারে অবস্থান নেয়।
আটক থাকায় আনোয়ার হোসেন আনু, রনি ও নজরুলের বক্তব্য পাওয়া যায় নি। এছাড়া বুলবুলের ফোন নাম্বারও ও বন্ধ ছিল।
পরে আনোয়ারের ভাগিনা শাহিন জানান, তার মামা আনোয়ার হোসেন আনুসহ কয়েকজনকে ভাড়ারিয়া মালাকার মোড়ে সোহাগের লোকজন মারধর করে। ভাড়ারিয়ার লোকজন বলড়ার সালাম ডাক্তারের দোকান ও মোটরসাইকেল ভাংচুর করেছে। পরে বলড়ার লোকজনও ভাড়ারিয়া বাজারে হামলা করেছে। তবে তিনি মারধর ফেরাতে চেষ্টা করেছন বলে দাবি করেছেন।
হরিরামপুর থা স মুমিন ন বলেন, আমাদের একটি টিম ও সদর থানার টিম রাতেই ঘটনাস্থলে যাই। মূল ঘটনা সদর থানা এরিয়াতে। গতরাতে পাঁচ জন আটক হয়। আইনি পদক্ষেপ সদর থানার।
বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জ সদর থানা ওসি এস এম আমানউল্লাহ বলেন, আনোয়ার হোসেন, নজরুল ইসলাম, রনি মিয়া, তুহিন ও রায়হান নামের পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।