স্টাফ রিপোর্টার :
মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা,আসবাবপত্র ভাংচুর ও নগদ টাকা লুট করে নেওয়ার অভিযোগ পরিবারের। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের পোড়রা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল রহমান বলেন, আমাদের দলীয় প্রভাবশালী এক নেতার সেল্টারে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তার বাসায় হামলা করে তার বাবা, মা ও বোনকে মারধর করেছে। বাসায় থাকা টেলিভিশন ও শোকেজ ভাংচুর করেছে এবং বিছানার তোষকের নীচে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা লুট করেছে। তারা ঘরে আগুন দিতে উদ্যত হলে, রুবেলের বাবা, মা, বোন তাদের পায়ে ধরে অনুরোধ করে রক্ষা পায়।
রুবেল আরোও জানায়, তার পৈত্রিক বাড়ি হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা কলাহাটা গ্রামে। তার পিতা মো. ছানোয়ার রহমান গত ২৫-২৬ বছর ধরে মানিকগঞ্জ জেলা শহরে ভাড়া বাসায় থেকে মানিকগঞ্জ বাজারে কাঁচামালের ব্যবসা করে আসছেন। সে সরকারী দেবেন্দ্র কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মাষ্ট্রার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। বর্তমানে রুবেল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বিগত কমিটির উপ-বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে। তার বাসায় সে এবং বাবা, মা থাকে। একমাত্র বোন ফারহানা আক্তারের বিয়ে হয়েছে।
ঘটনার রাতে বাসায় তার বাবা, মা, বোন ও ২ বছরের ভাগ্নি মিথিরা ছিল। যুবলীগ নেতা মিঠু, শুভসহ ১৫/২০ জন মোটর সাইকেলযোগে তাদের বাসায় যায় এবং হামলা চালায়। তারা তার বাবা-মাকে হুমকী দিয়ে বলে তাকে হত্যা করবে এবং বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেবে। এছাড়া মিঠু, শুভ ও আনু এরা মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। সে তার পরিবার-পরিজন নিয়ে জান-মালের নিরাপত্তাহীণতায় ভুগছে।
রুবেল বলে, তার বাবার কাঁচা মালের দোকানে কাজ করে তার চাচাতো ভাই মো. সুজাত হোসেন (২১)। ৩০ মে সন্ধ্যার দিকে ওই দোকনে যেয়ে সুজাতকে মারধর করে কালিখোলা এলাকার রাজন (১৯), প্রিতম (২১), পোড়রা এলাকার হৃদয় (১৮)সহ আরো ৪/৫ জন। এই খবরে রুবেল দোকানে যেয়ে তাকে মারধরের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা দোকানের কৌটায় থাকায় টাকা নিতে চাইলে সে তাদেরকে বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা রুবেলকে লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে এবং তারা কৌটা খুলে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এতে তার ডান হাতে ফ্র্যাকচার হয়ে যায়। পরে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।
এই ঘটনায় তার চাচাতো ভাই সুজাত মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি অভিযোগ দাযের করে। মামলা হওয়ার পর থেকে তাকে ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকে। মামলা তুলে না নিলে সকলকে দেখে নেয়ার হুমকীও দেয়। একপর্যায়ে, ৪জুন (মঙ্গলবার) তারবীর নামজের পর অভিযুক্ত এক নম্বর আসামী রাজের চাচা যুবলীগ নেতা মিঠু রুবেলকে ডেকে নিয়ে যায় কালী খোলা এলাকায়। তাকে অকথ্য ভাষায় গালগালি করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে সেখান থেকে নিয়ে যায় যুবলীগ নেতা খাজা রনির অফিসে। সেখানে আনু সাহা নামের এক যুবলীগ কর্মী তাকে মারধর করে এবং সেখানে থাকা সবাই তাকে মামলা তুলে নিতে বলে।
রুবেল মামলা তুলে না নেয়ায় তার ওপর একের পর এক হামলা ও তার বাসায় হামলা করে তার বাবা, মা ও বোনকে মারধর করেছে, আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে এবং নগদ টাকা লুট করেছে। এখনও তারা নানাভাবে হুমকী দিয়ে আসছে, মামলা তুলে না নিলে তাদেরকে মেরে ফেলবে, বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেবে-এমন অভিযোগ রুবেলের।
সে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার পরিবারের নিরাপত্তা ও আইনগত সহায়তা চেয়েছে।
এব্যাপারে মামলার অভিযুক্ত আসামী রাজের চাচা মিঠু বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় তার ভাতিজাকে রুবেল মারধর করেছে। এবিষয়ে উভয় পক্ষকে হাজির করে সমাধানের জন্য যুবলীগ কর্মী সুজন খোন্দকার ও উজ্জ্বর সওদাগরকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু রুবেল তাদের কথা মতো এগিয়ে আসেনি। বিধায় তাকে আনু সাহা মারধর করেছে। কিন্তু এই ঘটনার পর আনু সাহাকেও ওরা মারধর করেছে বলে তাদের দাবী। বুধবার রাতে রুবেলের বাসায় হামলার ঘটনা সে অস্বীকার করেছে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, রুবেলের বাড়ি হামলার ঘটনায় কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে, ঘটনা শোনার পর পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। অভিযোগ পেলে, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ৩০ মে দায়ের করা অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই বিষয়টি বসে সমাধান করা হয়েছে বলে তাকে জানানো হযেছে।