স্টাফ রিপোর্টার : অসহায় পিতার চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চাইলেন দুই শিশু সন্তান। ১৩ বছর বয়সী মেয়ে তন্নী, ৫ বছর বয়সী এবাদী অসুস্থ পিতা মো: জালালকে নিয়ে মানিকগঞ্জে প্রেসক্লাবে এসে তারা এই সহযোগিতা চায়। তাদের সাথে ছিল অসহায় মা মাসুমাও।
তারা বলেন, পিতা মো. জালাল মিয়া তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার অসুস্থতার কারণে তারা এখন অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ইতিমধ্যেই তাদের লেখা পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। বেঁচে থাকাই কষ্ট। তাদের অসুস্থ পিতার চিকিৎসা না হলে তাদের দেখার আর কেউ থাকবে না। তারা তাদের অসহায় দরিদ্র পিতার চিকিৎসার জন্য সমাজের সহৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
মো: জালাল মিয়ার বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের তরা গ্রামে। ৪ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সে ৫ম। ১০ বছর আগে কৃষক পিতা মোজাফ্ফর মিয়া মারা গেছেন। ৮৫ বছর বয়সী গৃহিনী মা হাজেরা বেগম অসুস্থ। তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় এবং ছোটজন প্রেসের কর্মচারী এবং মেঝ ভাই রাজমিস্ত্রী। বোনদের বিয়ে হয়েছে। সবাররই পৃথক সংসার। পৈত্রিক সূত্রে বাড়িতে একটি টিনের ঘর ছাড়া তার কিছু নাই।
জালাল মিয়ার সংসারে তার স্ত্রী মাসুমা, এক মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়ে তন্নী অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে এবং ছেলে এবাদী এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি।
মো: জালাল মিয়া ১৯৯৪ সালে জেলার দৌলতপুর পাইকেল আইনুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। কিন্তু আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে তিনি আর পড়ালেখা করতে পারেননি। একারণে সাভারের নবীনগরে একটি দোকনে চাকুরী নেন তিনি। সেখানে ৫ বছর চাকুরীর পর একটি জুতার দোকান দেন। স্বপন্ দেখেন বড় হওয়ার। কিন্তু ৪ বছর ওই ব্যবসা করার পর তিনি ঋণের কারণে ওই ব্যবসা ছেড়ে গাজীরচট এলাকায় একটি ফোন-ফ্যাক্সের দোকান দেন। এই ব্যবসায়ও তিনি খুব একটা ভাল করতে পারেননি। ৩ বছর ব্যবসার পর জীবনের চাকা ঘুরাতে ২০১৩ সালে তিনি মালয়েশিয়া যান। কিন্তু সেখানেও তার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। দেড় বছর পর অসুস্থতার কারণে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকার ল্যাব-এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ২ মাসে দুই লাখ টাকা খরচ হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতের ভেলুরে সিএমসি হাসপাতালে। সেখানে ১ মাস ১০ দিন চিকিৎসার পর তিনি যান চেন্নাই গ্লোবাল হাসপাতালে। সেখানে কিছুদিন থাকার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। সেখানকার চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ রেলা তাকে দ্রুত লিভার পরিবর্তনের পরামর্শ দেন। এতে তার খরচ হবে ৪০ লাখ টাকা।
পৈত্রিক বসতভিটা আর শ্বশুরবাড়ি থেকে উত্তারাধিকার সূত্রে পাওয়া স্ত্রীর জমি বিক্রি করে ২০ লাখ টাকার যোগার হয়েছে। আরো ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তার হাতে সময় আছে ১৫দিন। তার অসহায় দুই শিশু সন্তান এবং স্ত্রী মাসুমা সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। যোগাযোগ: মাসুমা, বিকাশ নং-০১৭১০৬৯৩০৬২। অ্যাকাউন্ট নং- ৩৭০১১০২৩১৫০৯৪০০১, ব্র্যাক ব্যাংক, মানিকগঞ্জ শাখা।