শুভংকর পোদ্দার, স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ছাত্রের হাতে শিক্ষক লাঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার পাটগ্রাম অনাথবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী সূত্রে জানাযায় , শনিবার সকালে ক্লাসের ভিতরে আব্দুল্লাহ আল আসিফ নামের দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী ক্লাস চলাকালীন সময়ে ক্লাসেই বসে গান গাচ্ছিলো।
এই অপরাধে বিদ্যালয়ের সহকারী বাংলা শিক্ষক মোঃ সাইজুদ্দিন তাকে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বললে শিক্ষার্থীটি তা না মেনে, শিক্ষকের সাথে তর্কে লিপ্ত হয় এবং এক পর্যায়ে শিক্ষকের গায়ে আঘাত করে তার নাক-মুখ ফাটিয়ে রক্ত বের করে দেয়।
পড়ে সেই শিক্ষক তার পকেটে থাকা রুমাল দিয়ে রক্ত মুছতে মুছতে কান্না করতে করতে বিদ্যালয় থেকে বেড়িয়ে যান। এরপর ওই ক্লাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা, শিক্ষকদের জানান পড়ে বিদ্যালয় শেষে ২/৩ জন শিক্ষক সহ প্রধান শিক্ষক ভুক্তভোগীর বাসায় গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন এবং তার সার্বিক খবরাখবর নেন।
এরপর গত রবিবার ওই শিক্ষার্থীর পিতা-মাতাসহ শিক্ষার্থীটি শিক্ষকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। শিক্ষার্থীর অপরাধ বিবেচনা করলে তাকে স্কুল থেকে টিসি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার কথা। কিন্তু তা না করে স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকগন ছাত্রটির ভবিষৎ জীবনের কথা বিবেচনা করে তার পিতা মাতার কাছ থেকে একটি মুচলেকা নিয়ে ক্ষমা করে দিয়েছেন। এবং সতর্ক করেছেন ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে তাকে চরম শাস্তি ভোগ করতে হবে। এছাড়া এই ছাত্র এর আগেও আরো ২/৩ জন প্রাইভেট শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা সহ অসদাচরণ করেছেন বলেও জানান তারা।
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফুসে উঠেন। এজন্য তারা অনেকেই এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের মত প্রকাশ করেন।
বিষয়টি জানতে ভুক্তভোগী শিক্ষক মোঃ সাইজুদ্দিন এর লেছড়াগঞ্জ বাজার সংলগ্ন তার ভাড়া বাসায় গিয়ে তাকে পাওয়া গেলেও তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনেন্দ্র নাথ রায় জানান, দশম শ্রেনীর ওই শিক্ষার্থী, শিক্ষকের সাথে খারাপ আচরণ করেছিলো। পড়ে আমরা বিদ্যালয়েরই সব শিক্ষক মিলে তার গার্জেনদের সাথে বসে, তার সার্বিক দিক বিবেচনা করে সে আর এই বিদ্যালয়ে ক্লাস, কোচিং কোনকিছু করতে পারবে না। শুধু সামনেই তার এসএসসির টেষ্ট পরিক্ষা শুধু সেইটা দিতে পারবে এবং সেটাতে সে উত্তীর্ণ হলেই এসএসসি পরিক্ষা দিতে পারবে বলে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিই। এছাড়া তিনি আরো জানান, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর পিতা একজন নায়েব এবং তার মাতা একজন প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষিকা। তাদের সন্তান এমন হবে এটা তার মাতা পিতাও মানতে না পেড়ে মুচলেকা দিতে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এবিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা, তাই বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারছি না। তবে বিষয়টি আমাকে জানালে হয়তো বিষয়টা অন্য রকম হতো। বিষয়টি যেহেতু তারাই করেছে সুতরাং এটা তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।