স্টাফ রিপোর্টার:
মহামারির থাবায় ক্ষতির মুখে বিশ্ব অর্থনীতি। স্থবির হয়ে গিয়েছিল বিশ্ব বাজারে পণ্যের আমদানি-রফতানি। এ পরিস্থিতিতে একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত করে বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। যার ফলে নাজুক অবস্থায় পড়ে দেশের প্রধান রফতনি খাত তৈরি পোশাক শিল্প।
এপ্রিলে প্রায় ৮৫ শতাংশ পোশাক রফতানি কমে যায়। সেই ধাক্কা কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে পোশাক খাত। করোনায় প্রার্দুভাবে স্থগিত ও বাতিল হওয়া ক্রয়াদেশও ফিরে আসছে। ফলে বাড়ছে রফতানি।
তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রফতানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন- বিজিএমইএ’র তথ্য বলছে, চলতি বছরের আগস্টে ৩৩৬ কোটি মার্কিন ডলারের (দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৮ হাজার কোটি টাকার বেশি- প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে) তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে; যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি। গত বছর আগস্টে ২২৮ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছিল।
বাংলাদেশের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চলতি বছরের মার্চে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের রফতানি কমে ২০ দশমিক ১৪ শতাংশ। এরপর এপ্রিলে কয়েক দশকের সর্বনিম্ন রফতানি কমে ৮৫ দশমিক ২৫ শতাংশে নামে। আর মে মাসে কমে ৬২ শতাংশ। জুনেও রফতনি কমার ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। কিন্তু তার ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হার আগের তুলনায় কম। অর্থাৎ মাত্র ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
ইপিবির তথ্য বলছে, করোনার প্রার্দুভাবে পোশাক রফতানিতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে চলতি বছরের এপ্রিলে। ওই মাসে মাত্র ৩৭ কোটি মার্কিন ডলারের পোশাক রফতানি হয়, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৫ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। মে মাসে এই আয় বেড়ে দাঁড়ায় ১২৩ কোটি ডলারে; যা আগের বছরের চেয়ে ৬২ শতাংশ কম। জুনে এসে পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। রফতানি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৪ কোটি ডলারে, যদিও এ অংক আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৬৩ শতংশ কম। তবে আগের মাসের চেয়ে ৮২ শতাংশ বেশি বেড়েছে।
তবে জুলাইয়ে এসে পোশাক রফতানি ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। চলতি বছরের জুনে তৈরি পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ আয় করে ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। কিন্তু তার আগের পাঁচ মাসে (ফেব্রুয়ারি-জুন) রফতানি আয় ৩০০ কোটি ডলার ছাড়ায়নি। তবে একক মাস হিসাবে এ বছর পোশাক খাত থেকে সব চেয়ে বেশি রফতানি আয় এসেছে আগস্টে, ৩৩৬ কোটি ৩৩ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, মহামারিতে মার্চের পর ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হওয়া পণ্য এখন রফতানি হচ্ছে। পাশাপাশি মাস্ক ও পিপিই গাউনের চাহিদা বেড়েছে। সব মিলিয়ে রফতানি আয় বেড়েছে। তবে আগামী মৌসুমের জন্য আশানুরূপ রফতানি আদেশ এখনও আসেনি। যেগুলো আসছে তারও মূল্য কম অফার দিচ্ছে। তাই সামনে কী পরিস্থিতি হবে তা দেখার জন্য আগামী মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।