স্টাফ রিপোর্টার:
জনগণের ভালোবাসা নিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক ভিসি প্রয়াত অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।
স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হয়েছে। কিন্তু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবাষির্কী ও মৃত্যুবাষির্কী ভারতে পালন করা হয় না। যে কোনো দেশে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম হবে, মানবতার জন্য সংগ্রাম হবে। আমাদের বঙ্গবন্ধুর আমলে তৈরি সংবিধানে লেখা আছে কাকে সমর্থ করবো।
তিনি বলেন, আমি বার বার বলেছি, এদেশের রোহিঙ্গা সমস্যা ভারতের সৃষ্টি। সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর করার কথা ছিল চীনের সহায়তায়, ভারতীয়রা অসন্তুষ্ট বলে এটা বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের চিরকালের বন্ধু চীন দূরে গেছে। এই জ্ঞানের জিনিসগুলো এমাজউদ্দিন সাহেব বিভিন্ন সময় তুলে ধরেছেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, বিএনপিকে বুঝতে হবে ভারতের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে তাদের সাহস রাখতে হবে। আজকে বিএনপিকে জাগতে হলে তাহলে অতীতের ভুল ভ্রান্তি স্বীকার করে নিতে সমস্যা নেই। আজকে এমাজউদ্দিন সাহেবকে এজন্য বুঝতে হবে, উনার জ্ঞানের আলোকে উনি দেখিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই আলোটা আমাদের ভেতরে, আমাদের রাজনীতিবিদদের ভেতর প্রবেশ করেনি। আওয়ামী লীগ তো বোঝেনি, বিএনপির খালেদা জিয়া বুঝেছিলেন ভারত এ দেশের বন্ধু নয়, শত্রু। সেই জিনিসটা তিনি হিসাব করতে পেরেছিলেন। আজকে তাদের (ভারতের) থেকে সাবধানে থাকতে হবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, অন্য আসামির জামিন হয় খালেদা জিয়ার জামিন হয় না। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির লোকজনের বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়া উচিত। তাহলে তারা বুঝতে পারত আওয়ামী লীগ কত খারাপ কাজ করেছে। সেখানে তারা আইনের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে, হাইকোর্টের বিচারপতিদের তাড়িয়েছে। বিএনপির এখন সময় এসেছে তরুণদের দিয়ে কাউন্সিল মিটিং করার। আমরা যারা আছি, তাদের দিয়ে মিটিং করাতে হবে। এক-দুইদিন কেউ আসবে না। তৃতীয় দিন ঠিকই সবাই আসবে। এ কথাটা প্রধানমন্ত্রী জানেন।
সভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশে এখন এমন এমন ঘটনা ঘটছে, করোনা দুর্যোগের মধ্যেও হৃদয় বিদারক পরিস্থিতি চলে। টেলিভিশনে ব্রিফ করা বন্ধ, বিকেল ৫টা বাজে প্রেসরিলিজ দিতে দিতে। সবাই ভালো করে পড়ে না। আগে সবাই জানতেন আজ কতজনের মৃত্যু হয়েছে, এখন বলতে পারেন না। কেন না এটাকে ধীরে ধীরে সহনীয় করে তোলা হয়েছে। মাত্র একদিন আগে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ঘরের মধ্যে ঢুকে মাথায় কুপিয়েছে তার মাথার খুলি ভেঙে ভেতরে ঢুকে গেছে। তারপর গ্রেফতার হয়েছে যুবলীগের সোনার তিনটি ছেলে। খুব বুদ্ধিমান তারা। এতো বুদ্ধি যে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, ‘আমরা চুরি করতে ঢুকেছিলাম’। যুবলীগ কী চোর? যুবলীগের নেতারা কী চোর? চুরি করতে গিয়ে কি মাথায় কোপ দেওয়া দরকার?
তিনি বলেন, ওই যুবলীগের শিক্ষা হয়েছে যে, খুন করার পর ধরা পড়লে বলতে হবে যে- ‘আমি চুরি করেছি’। ঘটনার পর বহিষ্কার করা হয়েছে, এই বহিষ্কার একেবারে লোক দেখানো। তার মানে দল এসব কাজ করে দেয়, শক্তি বৃদ্ধি করে দেয় ক্রিমিনালদের।