স্টাফ রিপোর্টার:
আশুলিয়া মধুপুর এলাকায় জাবালে নুর মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থীকে বেঁধে মেজেতে ফেলে মারধর করেছে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক। শিক্ষার্থী দুইজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
সোমবার সকালে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী দুই জনকে রশি দিয়ে বেঁধে মাদ্রাসার মেজেতে ফেলে বেধরক মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে।
শিক্ষার্থীদের মারধরের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আশুলিয়া থানা পুলিশ। ওই দিন সন্ধ্যায় অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক ইব্রাহীমকে আটক করা হয়। শিক্ষক হাফেজ ইব্রাহিম কুমিল্লা জেলার হুমনা থানার দুর্গাপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলো- রাকিবুল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। রাকিব ঘটনার পর থেকে তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে গেলে সেখান থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করেন। অপরদিকে মাহফুজের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়। সে মাদ্রাসায় অবস্থান করছে। উভয়কে পুলিশ উদ্ধার করে গণ স্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১১ সেপ্টেম্বর, আশুলিয়ার শ্রীপুর মধুপুর নতুন নগর মথনেরটেক এলাকায় জাবালে মাদ্রাসায় শিশু শিক্ষার্থী রাকিব ও মাহফুজকে প্রকাশ্যে বেঁধে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক ইব্রাহিম।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের শিক্ষক ইব্রাহীম ছাত্র দুই জনকে বেঁধে মারধর করতে ধাকে। এক পর্যায় তারা ভয়ে ও মারধরে শিক্ষার্থী দু’জন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এসময় অন্য শিক্ষার্থীরা আহত শিক্ষার্থীদের মারতে নিষেধ করলেও ওই শিক্ষক বিরামহীন ভাবে শিশুদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
এ ঘটনা মাদ্রাসার সিসিটিভি ফুটেজে ধারণ করা হয়। বিষয়টি এলাকাবাসী জানতে পেরে ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে মাদ্রাসায় প্রবেশ করে ওই শিক্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। নির্দয়, নিষ্ঠুর ওই শিক্ষকের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে এলাকাবাসী।
আহত শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলামের পিতা এমদুল ইসলাম বলেন, তার সন্তানকে হিফজ বিভাগে ভর্তি করেন। সেখানে স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশে সে ভালো লেখাপড়া শিখে একজন আলেম হবে। যাদের কাছে থেকে মানুষ হবে তারা যদি হয় নির্দয় ও নিষ্ঠুর তাহলে শিক্ষার্থীরা কি শিখবে। গরুকেও এমন মারধর করে না। তার সন্তানের সারা শরীরে রক্তাক্ত জখমের ক্ষত রয়েছে। তাকে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেছে শিক্ষক ইব্রাহিম। এসময় তার ছেলে পানি পানি করলেও সে তাকে পানি পান করতে দেয়নি।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগীদের পরিবারের সাথে কথা বলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। আহত শিশুদের মধ্যে রাকিব কে তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। মামলার বাদী রাকিবুল ইসলামের পিতা। মামলা নং-৭০।