1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ পূর্বাহ্ন

ডিআইজি হাবিবুর রহমানের উদ্যোগে অবহেলিত বেদে ও শান্দার সমাজ পেলো নিজস্ব কবরস্থান

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০
  • ৫৪৭ বার দেখা হয়েছে
শুভংকর পোদ্দার, স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের হাট বাসুদেবপুর গ্রামে প্রায় ৫০ বছর পূর্বে বসতি গড়ে কিছু বেদে ও শান্দার পরিবার। বর্তমানে এ গ্রামে প্রায় ১৬৩ বেদে ও শান্দার পরিবারের বাস। এদের মধ্যে অন্যান্যদের মাথা গোঁজার ন্যূনতম ঠাঁই থাকলেও এখনো প্রায় ২০টি পরিবার নৌকায় বসবাস করে। বেদে ও শান্দার সমাজের ভোটার সংখ্যাও প্রায় সাড়ে তিনশ’। স্থানীয়দের কাছে তাদের ‘শান্দারপাড়া’ নামেই বেশি পরিচিত।
বেদে ও শান্দার সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতিপূর্বে পার্শ্ববর্তী সমাজের কবরস্থানে তাদের সমাজের লোকজনকে কবর দেওয়া হলেও বিগত এক বছর যাবত ঐ কবরস্থানে ভূমির স্বল্পতা ও ঐ সমাজের লোকদের দাফনের কারণ দেখিয়ে তাদেরকে কবর দিতে দেওয়া হচ্ছে না। এর কারণে বেদে ও শান্দার সমাজের কেউ মারা গেলে তাদেরকে নিজ নিজ বসত বাড়িতেই দাফন করা হচ্ছে। ফলে সমস্ত বেদে ও শান্দারপাড়াই যেন হয়ে উঠেছে এক কবরস্থান।
এ অবস্থায় বেদে সমাজের পাশে এসে দাঁড়ান স্থানীয় সমাজসেবী ও মানিকগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব মামুন চৌধুরী। নিজে উদ্যোগ নিয়ে বেদে ও শান্দার সমাজের জন্য আলাদা কবরস্থান করার জন্য শালখাই মৌজায় ১৩ শতাংশ জমি কেনার জন্য এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকা বায়না দেন। যার মধ্যে এক লাখ টাকা তার নিজের, ১০ হাজার টাকা এক প্রবাসীর অনুদান এবং ১৫ হাজার টাকা বেদে সমাজের।
মামুন চৌধুরী জানান, স্থানীয় কিছু প্রবাসীর অনুদান দেওয়ার কথা থাকলেও করোনার সংকটে কেউ আর অনুদান দেয়নি। বেদে ও শান্দার সমাজের লোকজনের পক্ষেও বাকি টাকা ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে তিনি যোগাযোগ করেন গাজীপুর জোনের সিআইডির এএসপি এনায়েত করিম রাসেল এর সাথে, যিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তিনি বেদে ও শান্দার সমাজের জন্য কবরস্থান নির্মাণে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এনায়েত করিম রাসেলের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। তিনি নিজে কবরস্থানে অনুদান দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান ও এএসপি এনায়েত করিম রাসেল বেদে সমাজের জন্য কবরস্থানের বায়নাকৃত জায়গা পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা কবরস্থানের ১৩ শতাংশ ভূমির মূল্য, মাটি ভরাট ও বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদানের আশ্বাস দেন। এছাড়াও, যে সমস্ত বেদে ও শান্দার পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই এর অভাবে এখনো নৌকায় বাস করেন, তাদের জমি ক্রয় ও ঘর নির্মাণে সহযোগিতা করবেন বলে ডিআইজি হাবিবুর রহমান আশ্বাস প্রদান করেন।
মামুন চৌধুরী আরও বলেন, আমার ডাকে সাড়া দিয়ে ডিআইজি স্যার ও এএসপি এনায়েত করিম রাসেল বেদে ও শান্দার সমাজের পাশে দাড়ানোয় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
বেদে ও শান্দার সমাজের প্রতিনিধি শরিফ মিয়া (দুর্জয় শরিফ) বলেন, একটি বছর প্রায় প্রতিদিন আমি কেঁদে বালিশ ভিজিয়েছি। আল্লাহর কাছে আমাদের এ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রার্থনা করেছি। আজ এএসপি এনায়েত করিম রাসেল ও মামুন চৌধুরীর মাধ্যমে ডিআইজি স্যারের সহযোগিতায় আমাদের নিজেদের একটি কবরস্থান হলো। আল্লাহর কাছে তাদের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের কামনা করছি।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, আমার সহকর্মী পুলিশ কর্মকর্তা এএসপি এনায়েত করিম রাসেল আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন এবং বলেছেন একখানে একটি কবরস্থান করে দেয়া যায় কিনা। এ প্রেক্ষিতেই আজ আমরা এখানে এসেছি এবং জায়গাটি দেখেছি। এ সময় সকলের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষের পেশা বিভিন্ন রকম হতে পারে, এর কোনটিই কিন্তু ছোট নয়। আমি স্থানীয় জনগণের প্রতি আশা করবো তারা সচেতন হবেন, সহৃদয় হবেন, সহমর্মীর হবেন এবং অবহেলিত বেদে ও শান্দারদেরকে সমাজের সাথে একত্রিত করে যাতে নেওয়া যায় তারা সে চেষ্টা করবেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান, হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুঈদ চৌধুরী, গালা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিক বিশ্বাস ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলজার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury