1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৮ পূর্বাহ্ন

সেই রেহানাকে মুরতাদ ঘোষণা

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৯৮৮ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

একজন মুসলিম হয়েও শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন নারী অ্যাক্টিভিস্ট রেহানা ফাতিমা। এ ঘটনাকে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ আখ্যায়িত করে তাকে মুরতাদ (ইসলাম থেকে বহিষ্কার) ঘোষণা করেছে সেখানকার প্রভাবশালী এক মুসলিম ধর্মীয় সংগঠন। বিবিসি বাংলার অনলাইন সংস্করণে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাজ্যের প্রভাবশালী ধর্মীয় সংগঠন ‘দ্য কেরালা মুসলিম জামাত কাউন্সিল’ ঘোষণা করেছে-রেহানা ফাতিমা নামে ওই নারীর মুসলিম নাম ব্যবহার করার আর কোনো অধিকার থাকবে না। লাখ লাখ হিন্দু ভক্তর ‘ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত’ করার পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিল তার বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে হাতিয়ার করে গত সপ্তাহে হাতেগোনা যে কয়েকজন নারী কেরালার শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিলেন, রেহানা ফাতিমা ছিলেন তাদেরই একজন। গত শুক্রবার মন্দির খোলার পর তৃতীয় দিনে রেহানা ফাতিমা ও তার সঙ্গী কবিতা জাক্কালা নামে এক নারী সাংবাদিক শতাধিক পুলিশকর্মীর পাহারায় শবরীমালা মন্দিরের পাঁচশ মিটারের মধ্যে পৌঁছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু পাহাড়চূড়ায় অবস্থিত ওই মন্দিরে প্রবেশ করার আগেই তুমুল বিক্ষোভের মুখে তাদের ফিরে আসতে হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুজন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী মোটরসাইকেলে এসে রেহানার কোচির বাসভবনে হামলা চালায়। সে সময় তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আমার জীবনের ওপরও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। এমনকি আমার বাচ্চারা নিরাপদে আছে কি না সেটাও জানি না।’রেহানা ফাতিমা যেভাবে শবরীমালায় ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন, তার তীব্র নিন্দা জানায় বিজেপিসহ বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী দল। তামিলনাডুতে বিজেপির সভাপতি টি সৌন্দরারাজন টুইট করেন, ‘শবরীমালা হলো বিশ্বাসীদের উপাসনার জায়গা। কিন্তু বহু বছর ধরেই অবিশ্বাসী ও অ্যাক্টিভিস্টরা সেখানে গিয়ে অন্যের ধর্মবিশ্বাসকে নষ্ট করতে চাইছে।’ তিনি লেখেন, ‘অ্যাক্টিভিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার ছদ্মবেশে অন্য ধর্মের মৌলবাদীরাও যেভাবে এখন সেখানে ঢুকতে চাইছে, আমি তাতে স্তম্ভিত। হিন্দুদের এভাবে আঘাত করার চেষ্টা অতি নিন্দনীয়।’ কেরালার খ্রিষ্টান বিধায়ক পি সি জর্জও দাবি তোলেন, বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি নষ্ট করার অপরাধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩(এ) ধারা অনুযায়ী রেহানা ফাতিমাকে গ্রেফতার করা উচিত।

এরপরই ‘দ্য কেরালা মুসলিম জামাত কাউন্সিল’ সিদ্ধান্ত নেয়, রেহানা ফাতিমাকে ইসলাম থেকেই বহিষ্কার করা হবে। কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট এ পুকুঞ্জু এক বিবৃতিতে বলেন, ‘তিনি যা করেছেন সেটা হিন্দুদের ধর্মবিশ্বাসের পরিপন্থী।’ তিনি আরও বলেন, ‘ আগেও বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছেন রেহানা। তিনি ‘কিস অব লাভ’ (প্রকাশ্যে চুম্বন) প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। নগ্ন হয়ে সিনেমাতে অভিনয়ও করেছেন। এরপর কোনো মুসলিম নাম নিয়ে চলার অধিকার তার নেই বলেই আমরা মনে করি।’কাউন্সিল শুধু এতেই থেমে থাকেনি, এর্নাকুলাম সেন্ট্রাল মুসলিম জামাতকেও নির্দেশ দিয়েছে, রেহানা ফাতিমার পরিবারের মহল্লু সদস্যপদও (স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে) যেন খারিজ করে দেয়া হয়।এদিকে রেহানা ফাতিমা দ্য হিন্দু পত্রিকাকে বলেছেন, ‘আমি শবরীমালা মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি, কারণ আমার মুসলিম নামকে ব্যবহার করে তিনি ধর্মীয় আবেগকে উসকানি দিচ্ছেন ও দাঙ্গা বাধাতে চাইছেন।’রেহানা আরও দাবি করেন, শবরীমালা একটি ধর্মনিরপেক্ষ তীর্থস্থান এবং সেখানে সব ধর্মের মানুষেরই প্রবেশাধিকার আছে।শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করার আগে হিন্দু তীর্থযাত্রীরা যেভাবে ৪১ দিন ধরে উপবাস করে থাকেন, সেভাবে তিনিও নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন বলে জানিয়েছেন রেহানা ফাতিমা।রেহানা ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএলের একজন কর্মী। এ বছরের মার্চ মাসে সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের একটি ছবি পোস্ট করেও তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। ওই ছবিতে তাকে দেখা যায়, দুই টুকরো তরমুজ দিয়ে নিজের অনাবৃত স্তনদুটি ঢেকে রেখেছেন।তার কিছুদিন আগেই কেরালার কোঝিকোড়ে একজন মুসলিম অধ্যাপক বলেছিলেন, যে মুসলিম নারীরা হিজাব পরেন না, তারা নিজেদের স্তনদুটো কাটা তরমুজের মতো তুলে ধরতে চান।”সেই মন্তব্যের প্রতিবাদেই রেহানা ফাতিমা ওই ছবি পোস্ট করেন বলে জানিয়েছিলেন।

 

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury