1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন

মাধ্যমিকে সব সূচকেই ভালো ফল

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০
  • ৫০৪ বার দেখা হয়েছে

মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার সব সূচকেই এবার ভালো ফলাফল করেছে শিক্ষার্থীরা।  পাসের হার ও জিপিএ-৫ বৃদ্ধি, ছেলেদের পেছনে ফেলে এবারও মেয়েদের সামনে চলে আসা, ঝরে পড়া কমে যাওয়া, শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমে যাওয়া থেকে শুরু করে সব সূচকেই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে।
রবিবার (৩১ মে) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ফলের অনুলিপি তুলে দেওয়া হয়। সেখানে ফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।  আর বিস্তারিত ফলাফল জানানো হয় সচিবালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম এই প্রক্রিয়া অনুসরণের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফল পাঠানো হয়নি। শিক্ষার্থীরা মোবাইলে এসএমএস ও নিজ নিজ শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে ফল সংগ্রহ করেছে ঘরে বসেই।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফল হস্তান্তরের পর বেলা ১১টার পর ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে ফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। করোনার সংক্রমণের ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এবার আগের মতো ঘটা করে সংবাদ সম্মেলন করে ফল প্রকাশ করা হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও জমায়েত ছিল নিষিদ্ধ।

ফলাফলে দেখা গেছে, এবার পাসের হার ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।  গত বছর ছিল ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। এক বছরেই সর্বোচ্চ গ্রেড জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৩০৪ জন বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৪ জন।

এবার ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিকের এ চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পাস করেছে। নয়টি সাধারণ বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডের দাখিলে ৮২ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডের এসএসসি ভোকেশনালে ৭১ দশমিক ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এবার পাসের হার এবং জিপিএ-৫ দু’দিক থেকেই সংখ্যায় এগিয়ে আছে মেয়েরা।

ছাত্রদের পাসের হার যেখানে ৮১ দশমিক ৬৩ শতাংশ, সেখানে ছাত্রীদের পাসের হার মধ্যে ৮৪ দশমিক ১০ শতাংশ। এবার ১০ লাখ ২১ হাজার ৪৯০ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯২ জন। আর ১০ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৮ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩১ জন। পূর্ণাঙ্গ জিপিএ অর্থাৎ  পাঁচে পাঁচ পাওয়া এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৫ হাজার ৭৫৪ জন ছাত্র এবং ৭০ হাজার ১৪৪ জন ছাত্রী।

পরীক্ষায় এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে  এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন পরীক্ষার্থী। গতবারের চেয়ে এবার ৩০ হাজার ৩০৪  জন বেশি পরীক্ষার্থী ফলের সর্বোচ্চ এই সূচক অর্জন করেছে। গতবার মোট এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৪ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিল। এবার ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৬ হাজার ৪৭ জন। দিনাজপুর বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ হাজার ৮৬ জন শিক্ষার্থী। বরিশাল বোর্ডে ৪ হাজার ৪৮৩, রাজশাহী বোর্ডে ২৬ হাজার ১৬৭ জন, ময়মনসিংহ বোর্ডে সাত হাজার ৪৩৪ জন, যশোর বোর্ডে ১৩ হাজার ৭৬৪ জন, সিলেট বোর্ডে চার হাজার ২৬৩ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে নয় হাজার ৮ জন ও কুমিল্লা বোর্ডে ১০ হাজার ২৪৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ লাভ করেছে।

নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এবার ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। ফলাফলে ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮২ দশমিক ৩৪ শতাংশ, যশোর বোর্ডে পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩১, কুমিল্লায় ৮৫ দশমিক ২২, ময়মনসিংহ বোর্ডে পাশের হার ৮০ দশমিক ৩১, বরিশাল বোর্ড পাশের হার ৭৯ দশমিক ৭০, সিলেট বোর্ড পাশের হার ৭৮ দশমিক ৭৯, দিনাজপুর বোর্ডে পাশের হার ৮২ দশমিক ৭৩, চট্টগ্রাম বোর্ডে বোর্ড পাশের হার ৮৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ পাস করেছে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড এবারও পাসের হারে সেরা ফল করেছে।

শিক্ষার্থীদের আকাশচুম্বী এই সাফল্যের কারণ হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলেছে, কঠোর মনিটরিংয়ে শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত শিক্ষা নিশ্চিত করা, ইংরেজি ও গণিতসহ বিজ্ঞান বিষয়ে ভালো ফল, বিনামূল্যে সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার উপকরণ হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ভালো ফলের পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরেও ফলের সূচকে বেশকিছু ইতিবাচক লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি এর পেছনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

মন্ত্রী আর বলেন, ‘পরীক্ষকদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের গুণগতমান যাচাইয়ের জন্য একটি প্রশ্নমালা সব প্রধান পরীক্ষককে সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া, সারাবছর পরীক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনলাইনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু রয়েছে। পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এ তথ্যগুলো খুবই ইতিবাচক। ’ এই ফলাফলের জন্য শিক্ষা পরিবারের সবাইকে অভিনন্দন জানান মন্ত্রী।

যশোর শিক্ষা বোর্ডে অকৃতকার্য হয়েছে মোট ২২ দশমিক ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থী। সেই সঙ্গে বরিশাল বোর্ডে ২০ দশমিক ৩০ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ১৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ২১ দশমিক ২১ শতাংশ ও ময়মনসিংহ বোর্ডে অকৃতকার্য হয়েছে মোট ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী। যদিও শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার দেশে শতভাগ ফেল করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে। গত বছর শতভাগ ফেল করা বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৭টি হলেও, এবার তা কমে ১০৪ টি হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury