যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের জেরে বর্ণবাদবিরোধী প্রতিবাদ চলছেই। আন্দোলনের ১২তম দিনে রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ।
শনিবার সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসিতে। এছাড়া নিউইয়র্ক, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলস ও সান ফ্রান্সিসকোতেও রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। ফ্লয়েডের জন্মস্থান উত্তর ক্যালিফোর্নিয়াতে নিহত এ কৃষ্ণাঙ্গের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিন ওয়াশিংটন ডিসিতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হন ক্যাপিটল বিল্ডিং, লিঙ্কন মেমোরিয়াল ও হোয়াইট হাউসের বিপরীত দিকের লাফায়েটে পার্কে। এসময় তাদের হাতে ছিল ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ লেখা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার।
নিউইয়ের্কে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে ব্রুকলিন ব্রিজ অতিক্রম করেন। সান ফ্রান্সিসকোতে গোল্ডেন গেট ব্রিজ বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা।
শিকাগোতে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ ইউনিয়ন পার্কে সমবেত হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। লস অ্যাঞ্জেলসের হলিউডেও একটি এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে যায় বিক্ষোভের কারণে। ভার্জিনিয়া, আটলান্টা, ফিলাডেলফিয়াতেও সুবিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ।
কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরুর পর জারি করা কারফিউ তুলে নেয়া হয়েছে বেশিরভাগ শহরে। কড়াকড়ি শিথিলের পাশাপাশি কমেছে ধর-পাকড়ের হারও।
তবে শনিবার ওরেগন অঙ্গরাজ্যের পোর্টল্যান্ডে পুলিশের দিকে বিস্ফোরক নিক্ষেপের পর শহরটিতে ‘বেআইনি জনসমাবেশ ও নাগরিক সমস্যা’ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা যায়, মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েড। গত ২৫ মে সন্ধ্যায় প্রতারণার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এসময় এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে রাস্তায় মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরেন জর্জের। এভাবে অন্তত আট মিনিট তাকে মাটিতে চেপে ধরে রাখা হয়।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জর্জ ফ্লয়েড নিঃশ্বাস না নিতে পেরে কাতরাচ্ছেন এবং বারবার একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাকে বলছেন, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’
এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় মুহূর্তেই। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার মানুষ। প্রথম দিকে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও ধীরে ধীরে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি করা হয় অন্তত দুই ডজন শহরে। ধীরে ধীরে বর্ণবৈষম্য-বিরোধী এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
সূত্র: বিবিসি