কোভিড-১৯ টিকা নিয়ে গবেষকদের কাজের অগ্রগতি বেশ আশা জাগাচ্ছে। প্রাথমিক পরীক্ষার ফল পাওয়ার পর টিকার কার্যকারিতা নিয়ে ভালো কিছুর সম্ভাবনা দেখছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের দুটি প্রকল্প।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষক দল ও আমেরিকান ফার্মেসিউটিক্যাল কোম্পানি মডার্না জানিয়েছে, মানবদেহে তারা টিকার যে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেছে তাতে তাদের শরীরে ইমিউনিটি তৈরি হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।
ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের হাত থেকে কোটি কোটি মানুষকে বাঁচাতে গত কয়েক মাস ধরে টিকা নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করেছে দুটি কোম্পানি।
অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের টিকা বাজারে আনতে ’৮০ শতাংশ’ আত্মবিশ্বাসী। তাদের পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগে মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি বেড়েছে এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম টি সেল নামের শ্বেত রক্তকণিকার হারও দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
আর মাসুচুসেটসের ক্যামব্রিজ ভিত্তিক কোম্পানি মডার্নার দাবি, তাদের ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সফলভাবে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
গবেষণার শুরুতে কেবল অ্যান্টিবডি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। পরে টি-সেল বাড়ানোর জন্যও কাজ করতে শুরু করে তারা। টিকার প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে করোনার বিরুদ্ধে ইমিউনিটি বাড়াতে অ্যান্টিবডি ও টি-সেল উভয়েরই উপস্থিতি লক্ষণীয়।
অক্সফোর্ড তাদের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চালাবে যুক্তরাজ্যের ৮ হাজার মানুষের উপর এবং মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত দুই দেশ ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার ৬ হাজার মানুষও এতে অংশ নেবে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার উৎপাদিত এই টিকার লাখ লাখ ডোজ এরই মধ্যে তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কারণ তাদের বিশ্বাস এটা কাজ করবে।
আইটিভির রাজনীতি বিষয়ক এডিটর রবার্ট পেস্টন তার ব্লগে লিখেছেন, এই সপ্তাহের শেষ দিকে ট্রায়াল নিয়ে ভালো খবরের প্রত্যাশা করছেন। আগামী বৃহস্পতিবার চিকিৎসা সাময়িকী দ্য ল্যানচেটে এই ট্রায়ালের ফল প্রকাশিত হবে।
এদিকে আগামী ২৭ জুলাই মডার্নাও তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু করবে, সেখানে অংশ নেবেন ৩০ হাজার আমেরিকান। প্রাথমিক ধাপের পরীক্ষা শেষে এর গবেষকরা ৪৫ জনের শরীরেই অ্যান্টিবডির উপস্থিতি দেখেছেন। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষে জানা যাবে, এই টিকা নিরাপদ কিনা এবং সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী কিনা।