ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ফেসবুকে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের কর্নাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরু শহর। এ ঘটনায় থানায় হামলা-অগ্নিসংযোগের পর পুলিশের গুলিতে তিন জন নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। অন্তত ৬০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গতকাল ১১ আগস্ট, মঙ্গলবার রাতে এ বিক্ষোভ-হামলা, অগ্নিসংযোগ-গুলির ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, কংগ্রেসের স্থানীয় বিধায়ক (এমএলএ) অখণ্ড শ্রীনিবাস মূর্তির ভাইপো নবীন ফেসবুকে হজরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন- এমন অভিযোগে মুসলমানরা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের একটি অংশ বেঙ্গালুরুর কাভাল বাইসান্দ্রা এলাকায় শ্রীনিবাস মূর্তির বাড়ির সামনে দফায় দফায় সমবেত হন। তারা ইট-পাথর ছুড়েন। এমনকি পার্কিং-এ দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা৷
থানায় অভিযোগ না নেয়ার অভিযোগ এনে উত্তেজিত জনতার আরেকটি কে জি হাল্লি থানা ঘেরাও করে। তারা পুলিশ সদস্যদের ওপরও হামলা চালান৷
তবে এমন ফেসবুক পোস্ট করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নবীন৷ তার অভিযোগ, ফেসবুক আইডি হ্যাক করে অন্য কেউ এই কুরুচিকর ও উস্কানিমূলক পোস্ট করেছে। যদিও সেই পোস্টটি পরে ডিলিট করে দেওয়া হয়।
সহিংসতা ভয়াবহ আকার ধারণ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উত্তেজিত জনতার ওপর প্রথমে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে। পরে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটলে গুলিবর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তিন জন নিহত হয়।
অন্তত শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেইসাথে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত নবীনকেও।
এ বিষয়ে টুইট বার্তায় ব্যাঙ্গালোর পুলিশ বলেছে, ডিজি হালি ও কেজি হালিতে সহিংস ঘটনা ঘটে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানায় তারা।
সহিংসতার সময় ২৪টি ফোর-হুইলার ও থানায় রাখা ২০০ মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। একটি পুলিশ স্টেশন ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ব্যাঙ্গালোর পুলিশ কমিশনার কমল পন্থ বলেছেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।’
আজ ১২ আগস্ট, বুধবার সকালে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা সহিংসতার নেপথ্যে যারা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।