দেশের একটি প্রধান মহাসড়কে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে পাকিস্তান। ‘বর্বর, জঘন্য’ এই অপরাধে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রাস্তায় নেমেছে সাধারণ জনগণ। ধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ওই নারী দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর থেকে তিনি গাড়ি চালিয়ে গুজরানওয়ালা যাচ্ছিলেন। অজ্ঞাত হামলাকারীরা তার গাড়ি থামিয়ে জানালা ভাঙে এবং কাছের একটি মাঠে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। তার নগদ অর্থ ও অলঙ্কারও কেড়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদনে জানায়, সন্তানদের সামনেই এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার প্রাদেশিক পুলিশ বলেছে, নতুন নির্মিত এই মহাসড়কে যাত্রীদের সুরক্ষায় কোনও পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি এবং দ্রুত তাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
ওই ঘটনার পর করাচিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানায় তারা প্ল্যাকার্ড হাতে।
মহাসড়কে নারী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর পর লাহোরের পুলিশ প্রধান উমর শেইখের মন্তব্য ঝড় তোলে। তিনি বলেছিলেন, ওই নারীকে ওই সময় একা ভ্রমণে যাওয়া উচিত হয়নি। কিছু রাজনৈতিক বিতর্কের পর নতুন নিয়োগ পাওয়া শেইখের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
২০১৬ সালে এক হামলায় ২৩ বার ছুরিকাঘাতের শিকার আন্দোলনকর্মী ও আইনজীবী খাদিজা সিদ্দিকী বলেছেন, ‘এমন ঘটনার পর পাকিস্তানের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য দেওয়া উচিত। তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত, কারণ এই দেশের নারীরা প্রতিদিন ভুগতে থাকে।
লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের এই সমস্যার অংশ বলেছেন খাদিজা, ‘তারা অবৈধ কাজের সহযোগী এ ধরনের লোকদের উচিত নয় পুলিশ বিভাগের দায়িত্বে থাকার, যাদের আমরা দেশের সুরক্ষাকারী হিসেবে প্রত্যাশা করি।
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিজ্ঞ মানবাধিকার কর্মী তাহিরা আব্দুল্লাহকে, ‘নারী-শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংস অপরাধের ছোট্ট একটা উদাহরণ এটা, যা কখনও প্রকাশ পায় না বিশেষ করে আমাদের গ্রাম এলাকায়।’
তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘এটা একটা ইতিবাচক লক্ষণ যে এই বর্বর, জঘন্য গণধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনাটি প্রচুর প্রচার পাচ্ছে, যা কঠোর পদক্ষেপ নিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এ ধরনের নৃশংসতা ও পাশবিকতা কোনও সভ্য সমাজে হতে দেওয়া যায় না। এ ঘটনাগুলো আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের লংঘন ও সমাজের অবমাননা।