পূর্ব লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা এখনও থামেনি। এর রেশ ধরে শতাধিক চীনা অ্যাপ বাতিল করেছিল ভারত সরকার। ভারতের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব হারানোর শঙ্কায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু ভারতের অনেক বিষয়ে চীনের নজরদারি থেমে নেই। ভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর তদন্তমূলক প্রতিবেদনের বরাতে আনন্দবাজার ও এই সময় বলেছে, চীনা তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলো প্রতিনিয়ত নজর রেখে চলেছে ভারতের অন্তত ১০ হাজার বিশিষ্ট ব্যক্তির ওপর।
ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ক্রীড়াব্যক্তিত্বও রয়েছেন এই তালিকায়। তাদের কার্যক্রম, গতিবিধিসহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করছে শেনঝেনের এক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা। দক্ষিণ পশ্চিম চীনের গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেন শহরের ‘সিনহুয়া ডেটা ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড’ নামের ওই সংস্থা চীন সরকার, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি, চীনের সেনাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকেও তথ্য সরবরাহ করে।
নজরদারির এই তালিকায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিরোধী দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধী। আছেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অশোক গেহলট, অমরিন্দর সিং, উদ্ধব ঠাকরে, নবীন পট্টনায়েক ও শিবরাজ সিং চৌহান। ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের মধ্যে রাজনাথ সিং, রবি শংকর প্রসাদ, নির্মলা সীতারমণ, স্মৃতি ইরানি ও পীযুষ গোয়েল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত ও দেশের অন্তত ১৫ জন সাবেক সেনাপ্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান ও নৌবাহিনী প্রধান, দেশের প্রধান বিচারপতি শরদ বোবদের নাম রয়েছে এই তালিকায়। আছেন ভারতের ব্যাটিং গ্রেট শচীন টেন্ডুলকারও।
শুধু রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেই নয়, ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে চীন। তালিকায় রয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ আমলা, বিচারপতি, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, অভিনেতা, ক্রীড়াব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় নেতা ও সমাজকর্মীরাও। এখানেই শেষ নয়, অর্থনৈতিক অপরাধ, দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ এবং নারকোটিকস, সোনা, অস্ত্র ও বন্যপ্রাণী পাচারকারীসহ কয়েকশ অভিযুক্তকেও নজরে রেখে চলেছে চীনের এই কোম্পানি।
কূটনৈতিক ও সেনা স্তরে আলোচনার প্রক্রিয়া চলা সত্ত্বেও লাদাখে যেভাবে টানা আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়ে চলেছে বেইজিং, সেখানে এই তথ্য প্রকাশ্যে আসায় একে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে দিল্লি।