1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ

প্রশাসনের অভিযানের মধ্যেও যমুনায় ইলিশ শিকারের ধুম

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০
  • ৩৫৫ বার দেখা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:

শিবালয়ের যমুনা নদীতে ইলিশ শিকার কিছুতেই থামছে না। প্রথমদিকে উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলেও সে অভিযানের গতি কমে যাওয়ায় জাফরগঞ্জ থেকে জেলেরা মা ইলিশ শিকার করতে নদীতে কারেন্ট জাল ফেলছে।

উপজেলা প্রশাসন আসার খবর পেলে জেলেরা নদী থেকে জাল গুছিয়ে তীরে চলে আসে আবার তারা চলে গেলে ফের নদীতে জাল ফেলে।

প্রজনন মৌসুমে সরকারিভাবে ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন নদীতে ইলিশ শিকারের নিষেধাঞ্জা থাকলেও তা মানছেন না জেলেরা। মাঝে মাঝে কিছু জেলেদের নদীতে ইলিশ শিকারের অপরাধে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড দিচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত দুই তিন দিন ধরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য অভিযান পরিচালনা না করায় যমুনা নদীর জাফরগঞ্জ অংশে জেলেরা নদী থেকে মা ইলিশ শিকার করছে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিনে দেখা যায়, সারারাত মাছ শিকার করে ভোর থেকে যমুনা নদীর জাফরগঞ্জ অংশের জেলেরা তীরে আসতে থাকে। তাদের ব্যবহারিত নৌকা, জাল নিয়ে আরো একটি গ্রুপ নদীতে জাল ফেলার জন্য বের হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রশাসনের লোক আসার খবর পেলে একসঙ্গে ইঞ্জিনচালিত নৌকার কালো ধোয়া উড়িয়ে জেলেরা তীরে চলে আসছে, তীরে আসার পর নৌকা থেকে মাছ ও মাছ শিকারের কারেন্ট জাল গুটিয়ে মাথায় করে নিরাপদ স্থানে রেখে আসে। পরে প্রশাসনের লোকজন চলে গেলে শিকার করা মাছ বিক্রি শুরু করে। জেলেরা অভিনব কায়দায় কিশোরদের নিয়ে মাছ শিকারে যাচ্ছে কারণ হিসেবে তারা বলছে ভ্রাম্যমাণ আদালত কিশোরদের আটক করলেও কারাদণ্ড দেবে না, নামমাত্র জরিমানা দিয়ে ছেড়ে দেবে।

ছামিউল মিয়া নামে জাফরগঞ্জ এলাকার এক মৌসুমি জেলে বলেন, মাছ না ধরলে খাবো কী, মাছ ধরতে পারলে বিক্রি করে যে টাকা পাই তা দিয়ে বউ-বাচ্চা নিয়ে খাই। মৎস্য অফিসের দেওয়া কার্ড অনেকের আছে, তারা ২০ কেজি করে চাল পাইছে। আমার কার্ড নাই আমি চাল পাই নাই। আমি কি না খেয়ে থাকমু, মাছ ধরার জন্য জাল ও নৌকা তৈরিতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়ছে। নিজের কাছে টাকা না থাকায় লোন কইরা এ সব করছি, আয় না থাকলে খামু কী আর লোনের টাকা পরিশোধ করমু ক্যেমতে। এ পর্যন্ত ১৩ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করছি কেমনে লোনের টাকা পরিশোধ করমু সেটাই বুঝবার পারছি না। তার মধ্যে উপজেলা থেকে মাঝে মাঝে অভিযান চালায়, ধরে নিয়ে গিয়ে জেল জরিমানা করে। সেজন্য একটা উপায় পাইছি অল্প বয়স হলে জেল দেয় না কিছু টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়, তাই পোলাপাইন নিয়া মাছ ধরতে যমুনায় যাই।

আলোকদিয়া চরের আরো এক জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাছ ধরতে না পারলে বাড়িতে চুলা জ্বলবো না হগলতেই না খেয়ে মরবো। গত বছর ম্যাজিস্ট্রেট নদীতে মাছ ধরার অপরাধে ধাওয়া দিছিলো তখন আমরা তাড়াহুড়ো করে পালানোর সময় আমার পাশে বাহেজ মিয়া নামে এক জেলের নৌকার উপর দিয়ে আরেক নৌকা উঠিয়ে দিলে নৌকার গলোইয়ের ধাকায় সে মারা যায়। তার পরিবারের লোকজন এখন না খেয়েই কোনো মতে জীবনযাপন করছে। আমরাও সরকারি নিষেধাঞ্জা অমান্য করে মাছ শিকার করতে চাই না তবে সরকার আমাগো এ কয়টা দিন দেখলেই হয়।

নাম প্রকাশ না করার মর্তে জাফরগঞ্জের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে যমুনা নদীর জাফরগঞ্জ অংশের তীরে গ্রাম পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। গ্রাম পুলিশ জেলেদের নিষেধ করলে উল্টো তাদের ধমক দিয়ে নদীতে জাল নৌকা নিয়ে ইলিশ শিকার করতে বের হয়ে জেলেরা। অভিযানের কারণে প্রথম প্রথম কয়েক দিন নদীতে জেলেরা মাছ ধরতে যেতে সাহস পাচ্ছিলো না কিন্তু এখন তো রাতদিন একসঙ্গে নদী থেকে মাছ শিকার করছে। প্রশাসনের লোক জন আসছে এমন খবর জেলেদের কাছে পৌঁছে যাওয়ায় তাদের আরো ধরতে পারছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন।

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বি এম রুহুল আমিন জানান, যমুনায় যারা প্রতিনিয়ত ইলিশ শিকার করতে কারেন্ট জাল ফেলছে তাদের আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury