এস এম আকরাম হোসেন :
মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্ব দাশড়ার ৫নং ওয়ার্ডে কমল কুমার রায় ও তার ছেলে শান্ত রায়ের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা সহ নানা অপকর্মে অতিষ্ট স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও নীরহ এলাকাবাসী।
তাদের বাবা-ছেলের নানা অপকর্ম থেকে প্রতিকার পেতে গত বুধবার পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এই অভিযোগপত্রে গণস্বাক্ষর দিয়েছে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা,৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, ওয়ার্ডের নারী সংরক্ষিত কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা, মানিকগঞ্জ সিদ্দিকীয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার সাধারন সম্পাদক মিকদাদ সিদ্দিকী,সিদ্দিকীয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মনিরুজ্জামান, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান এক্য পরিষদের সভাপতি গুরুদাস রায়, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব সাহা,মানিকগঞ্জ বাজার বনিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম, সাবেক সহ সভাপতি মো: হানিফ আলী,মানিকগঞ্জ বাজার স্বর্ণ শিল্প সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক রঘুনাথ কর্মকার, চিকিৎসক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, ছাত্র যুবক সহ ঐ এলাকার ৮২ জন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে,মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কমল কুমার রায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘ দুই যুগ ধরে অবৈধভাবে বাংলা মদের ব্যবসা সহ মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।বর্তমানে তাহার ছেলে শান্ত রায় ইয়াবা ব্যবসা, চাঁদাবাজি,চুরি ও মাদক সেবনের সাথে জরিত। কয়েকমাস আগে ইয়াবা সহ পুলিশের কাছে ধরা পড়ে মোবাইল কোর্টে ৩ মাসের সাজা হয়েছিল।গত ১২/০৩/২০২২ ইং তারিখে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক সুজন কুমার রায় নতুন বাড়ি করার কারনে শান্ত তার কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে এবং না দিলে তাহার ক্ষতি কারার হুমকী দেয়।
এছাড়া এরআগে একজন সচিব পদমর্যাদার ব্যক্তির বাড়ী তৈরির হেড মিস্ত্রির কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করে।নানা ভয় দেখিয়ে খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজ ও স্কুলের ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া সহ ছাত্রীদেরকে উত্যাক্ত করা শান্তর রায়ের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এরকম সহস্র নানা অভিযোগ আছে শান্ত রায়ের বিরুদ্ধে।কমল রায়ের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন আদালতে অনেকগুলো মাদকের মামলা হয়েছিল। এই অবৈধ ব্যবসা করে বর্তমানে তার শহরের পূর্ব দাশড়া এলাকার মধ্যে তিনটি আলিশান বাড়ী নির্মান করে কোটি কোটি টাকার মালিকবনে গেছেন।
খানবাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মীর মোখসেদুল আলম বলেন, শান্ত রায় ও রাজ নামের দুই বখাটে ছেলের অপকর্মে আমার কলেজের শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ। বিভিন্ন সময়ে তাদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা পয়সা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এমনকি কলেজের ছাত্রীরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পায় না। মৌখিকভাবে কয়েকবার সতর্ক করলেও কোন কাজে আসছেনা।এভাবে তাদের অপকর্ম চলতে থাকলে এই কলেজে কোন অভিবাবক তাদের সন্তানদের ভর্তি করবে না। কলেজের পক্ষ থেকে ওদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক সুজন কুমার রায় বলেন, শান্ত রায় নতুন বাড়ী করার জন্য আমার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করেছিল।এবিষয়ে আমি এলাকার গণ্যমান্যদের কাছে বিচার চেয়েছিলাম। এলাকার স্থানীয় কাউন্সিলর আব্দুর রাজ্জাক রাজার নেতৃত্বে গন্যমান্যরা ডাকলেও শান্ত ও তার বাবা কেউই আসেননি।
দাশড়া এলাকার তপন কুমার বিশ্বাসের বাড়ীর কেয়ারটেকার সুদেব দাস বলেন,বাড়ি নির্মান কাজ করার সময় শান্ত সহ কয়েকজন হেড কন্টাকটারের কাছে চাঁদা বাদী করে।শান্তকে চাঁদা না দেওয়ায় তার ক্ষতি করার হুমকী দিয়ে চলে যায়।
নানা অভিযোগে অভিযুক্ত কমল কুমার রায়ের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা সহ না অভিযোগ দায়ের করেছেন তা সত্য নয়। বাব-দাদার আমল থেকে মদের ব্যবসা করতাম। বর্তমানে আমার দুইটি বাড়ী আছে ও একটি বাড়ী ৪০ লাখ টাকায় বিক্রী করেছি। অনেক কষ্ট করে এই টাকা পয়সার মালিক হয়েছি। ২০০০ইং সাল থেকে মদের ব্যবসা ছেড়ে মৌচাক মার্কেটে কাপরের ব্যবসা করি।
পুলিশ সুপার বলেন, এ ব্যাপারে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আমার সাথে দেখা করে এবং একটি লিখিত অভিযোগ দেন। আমি আমার অফিসারকে এ বিষয়ে তদন্ত করতে নির্দেশনা দিয়েছি। |