স্টাফ রিপোর্টার:
আমেরিকার আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটল-এ ট্রাম্প সমর্থকদের ঢুকে পড়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। এ ঘটনায় বিস্মিত ও স্তব্ধ হওয়ার প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্বের রাজনৈতিক নেতারা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক দৃশ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন।
সেই সঙ্গে ‘শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খল ক্ষমতা হস্তান্তরের’ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, ‘ট্রাম্প এবং তার সমর্থকদের উচিত শেষ পর্যন্ত আমেরিকার ভোটারদের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া এবং গণতন্ত্রের পদদলন না করা।
এক বিবৃতিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ বলেছেন, ‘এটা পুরোপুরি অসুস্থ এবং হৃদয়বিদারক দৃশ্য। রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল কোনো দেশে এ ধরণের ঘটনার মাধ্যমে নির্বাচনের ফলকে বিতর্কিত করা হয়- আমাদের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে এর কোনো স্থান নেই।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইতিহাস সঠিকভাবেই ক্যাপিটলের ওপর এই আক্রমণকে মনে রাখবে। আর সেটি এই মুহূর্তটি প্রচণ্ড অসম্মান এবং এই জাতির জন্য লজ্জাজনক।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘গণতন্ত্রের ওপর এই আঘাতের ঘটনায় কানাডিয়ানরা প্রচণ্ড বিরক্ত।’
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্ন্দান্দেজ জো বাইডেনের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন এবং সহিংসতার ঘটনার প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন। একইভাবে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভান দোকে সহিংসতাকে প্রত্যাহার করে কংগ্রেসের সদস্যদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্টিয়ান পিনেরা ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার পদক্ষেপের’ নিন্দা জানিয়েছেন।
সহিংসতার পরও সেনেটে অধিবেশন শুরু হওয়ার পর ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে আজকের দিনটি একটি কালো দিন হিসেবে উল্লেখ থাকবে। রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেন, ‘আজকের এই অস্থির জনতা ছাড়াও মার্কিন কংগ্রেসের চেয়ে অনেক বড় হুমকি মোকাবেলা করেছে।
ডেমোক্রেটিক সেনেটর চাক শুমার বলেছেন, ‘৬ই জানুয়ারিকে এখন আমরা আমেরিকার ইতিহাসের সেই অল্প কয়েকটি তারিখের সঙ্গে যুক্ত করতে পারি যেগুলো কুখ্যাত হয়ে থাকবে।’ সহিংসতায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় শোকও জানিয়েছেন তিনি। শুমার আরও বলেন, ‘এই হামলাকারীদের বিক্ষোভকারী বলা যায় না। তারা অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী, যারা আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব করে না।
এদিকে, ক্যাপিটলে সহিংসতার জের ধরে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সারাহ ম্যাথিউ পদত্যাগ করেছেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের সেবা করার সুযোগ আমার জন্য সম্মানের ছিল এবং যে নীতি আমরা বাস্তবায়ন করেছি সেগুলোর জন্যও আমি গর্বিত। কংগ্রেসের হলে যেহেতু আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে তাই আজ আমাকে যা দেখতে হয়েছে তার জন্য আমি খুব বিরক্ত।
এর আগে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ এবং ট্রাম্পের সাবেক প্রেস সেক্রেটারি স্টিফানি গ্রিশাম এই হট্টগোলের মধ্যেই পদত্যাগ করেন। কিন্তু ক্যাপিটলের ওপর হামলার সঙ্গে এর কোন যোগসূত্র আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এদিকে, এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তিনি টুইটারে ঘটনার প্রেক্ষিতে লিখেছেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসিতে সংঘর্ষ ও হিংসার ঘটনায় আমি অত্যন্ত আহত। নিয়মমাফিক ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া যেন চলতে থাকে। একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে কখনোই বেআইনি আন্দোলনের দ্বারা বিপথে চালিত হতে দেওয়া যায় না।