মিয়ানমারের ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) দলের নেত্রী অং সান সু চিকে আটকের পর আন্তর্জাতিক মহল প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ‘আমরা বার্মিজ সেনা কর্মকর্তাদের বলছি, সকল সরকারি কর্মকর্তা ও নেতাদের মুক্তি দিন এবং গত ৮ নভেম্বর গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জনগণ যে রায় দিয়েছেন তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। মিয়ানমারের জনগণের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, শান্তি এবং উন্নয়ন প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকবে। সেনাবাহিনীকে দ্রুত তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেসের মুখপাত্র বলেন, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এই ধরনের সিদ্ধান্ত বড় বাধা। মিয়ানমারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতাদের আগ্রহ দেখাতে হবে, ফলপ্রসূ আলোচনা করতে হবে, সহিংসতা থেকে দূরে থাকতে এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি বলেছে, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে মিয়ানমারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। মিয়ানমারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভারত সবসময়ই দ্রুত সহযোগিতা করে আসছে। আমরা বিশ্বাস করি আইনের শাসন ও গণতন্ত্র অব্যাহত থাকবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিস পেইন বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আবারও দেশটির ক্ষমতা দখল করতে চাইছে এবং সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে আটক করেছে— এই খবরে অস্ট্রেলিয় সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করছে। আমরা সেনাবাহিনীকে বলব- আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন ও আইনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুন। পাশাপাশি নেতা ও অন্যদের বে-আইনিভাবে আটক থেকে মুক্ত করুন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর জন সিফটন বলেন, ‘কয়েক দশক ধরে মিয়ানমার শাসন করে আসা সামরিক জান্তা আদতে কখনোই ক্ষমতা থেকে সরে যায়নি। তারা কখনোই বেসামরিক কর্তৃত্বের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। আজকের ঘটনাবলি কেবল একটি রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রকাশ করে যা সবসময়ই মিয়ানমারের রাজনীতিতে বিদ্যমান ছিল।
তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দেশের উচিত নিষেধাজ্ঞা জারি করে শক্ত বার্তা পৌঁছে দেওয়া। তাৎক্ষণিকভাবে নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিলকরণ এবং সামরিক নেতৃত্বের ওপর কঠোর ও নির্দেশিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে সবাইকে একত্রিত হতে হবে। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানকে ব্যবসায়ীক সুবিধা বর্জন করতে হবে। বার্মিজ জান্তারা চীনের অধিনে যেতে চায় না।