ডিসকো ড্যান্সার’খ্যাত অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। টলিউড, বলিউডে সমান জনপ্রিয়। এক সময় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। এরপর ‘সারদা কাণ্ডে’র পর নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। কলকাতাবাসী ধরেই নিয়েছিলেন দাদা বোধ হয় আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। কিন্তু গত ৭ মার্চ বিজেপিতে যোগদানের পর নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন মিঠুন।
মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তীর সম্পর্কের গভীরতা ছিল সর্বজনবিদিত। ২০০৯ সালে সুভাষ চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর বাম নেতাদের সঙ্গে মিঠুনের দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে। সবাইকে অবাক করে রাজ্যসভায় মিঠুনকে সাংসদ করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। তখন মিঠুন বলেছিলেন, ‘আমি অকৃতজ্ঞ নই। আমাকে রাজ্যসভায় পাঠানোর জন্য আমার ছোট বোন মমতাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি কোনোদিন ভুলব না।
কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মিঠুন পুরনো দিনের সব কথাই ভুলে বসে আছেন। এ কারণে রাজনীতিতে মিঠুন ফিরে আসায় অনেকে যেমন বিস্মিত হয়েছেন, তেমনি অনেকেই ঝেড়েছেন ক্ষোভ। অনেকে আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন- যে মিঠুন গত দু’বছরে কলকাতামুখো হননি, তিনি সেই কলকাতায় এসে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে স্টেজে উঠলেন কী করে।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মিঠুনের বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গে অভিনেতা ও তৃণমূল প্রার্থী চিরঞ্জিৎ ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘উনি (মিঠুন) সুবিধা নেওয়া লোক, সুরক্ষা পেতেই বিজেপিতে গিয়েছেন। শুনেছি, মিঠুনের ছেলের নামে কেস রয়েছে। ওর নামেও সিবিআইয়ে মামলা ছিল। সব মিলিয়ে হয়তো কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে।
তবে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে, বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়াবেন না মিঠুন। তিনি পার্টির হয়ে প্রচারে অংশ নেবেন। আর তাতেও উঠেছে প্রশ্ন। মিঠুন ময়দানে যতই ‘মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে’ বা ‘আমার এক ছোবলেই ছবি’ ডায়ালগ দিন না কেন, ভোটের মাঠে এর প্রভাব কমই পড়বে। কেননা অনেকে মনে করেন, বিভিন্ন দল ঘুরে এসে মিঠুন ইতোমধ্যেই তার ইমেজ নষ্ট করে ফেলেছেন।
এক সময় নকশালের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। স্মরণ করে টলিউড অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র বলেন, ‘‘তার (মিঠুনের) ছেলের ঘটনাটি যদি সত্যি হয়, তবে তো সাংঘাতিক ব্যাপার। মনে হয় নিরাপত্তার কারণেই সে বিজেপিতে গেছে। ‘দেবদূত’ সিনেমার শুটিংয়ে আমরা একসঙ্গে রান্না করেছি। নকশাল আমলের গল্প বলতেন। উনার বাইরের মোড়কটা বদলে গেছে।
টলিউডের গুণী পরিচালক অরিন্দম শীল। মিঠুন চক্রবর্তীর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি। এ নির্মাতা বলেন, ‘মিঠুনদা আমার অত্যন্ত কাছের একজন মানুষ। তাকে নিয়ে সমালোচনা করতে পারব না। মিঠুনদা একদিন আমাকে বলেছিলেন, ‘দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ছেড়ে যাসনে।