আফগানিস্তানে তালেবান শাসনামলের ইতিহাস স্মরণ করে ভয়ে কাঁপছে দেশটির নারীরা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের ওই সময়টিতে আফগান নারীদের জন্য বোরকা পরা বাধ্যতামূলক ছিল।
ওইসময় দেশটির নারীদের চাকরি করা নিষিদ্ধ ছিল। পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীরা ভ্রমণে যেতে পারতেন না। এমনকি ১২ বছরের বেশি বয়সি মেয়েদের পড়াশোনার অনুমতি ছিল না।
ফের তালেবানের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে সেসব দু:সহ স্মৃতি ঘুরপাক খাচ্ছে আফগান নারীদের মধ্যে। যে কারণে গত কয়েকদিন ধরে বোরকা কেনার হিড়িক দেখা গেছে রাজধানী কাবুলে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে নারীদের জন্য বোরকা পরা বাধ্যতামূলক নয় বলে জানিয়েছেন তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন।
তিনি বলেছেন, ‘তালেবান আমলে আফগানিস্তানে নারীদের জন্য বোরকা পরা বাধ্যতামূলক নয়। বাইরে বের হওয়ার সময় তাদের হিজাব পরলেই চলবে।
সুহাইল কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবান দপ্তরের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সুহাইল শাহিন বলেন, ‘পুরো শরীর ঢাকা বোরকা নয়, নারীরা মাথায় হিজাব পরেছেন কিনা সেটা পর্যবেক্ষণ করা হবে।’
নারী শিক্ষার বিষয়ে সুহাইল শাহিন বলেন, ‘তালেবান শাসনামলে এবার মেয়েরা প্রাথমিক থেকে উচ্চস্তর পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করার সুযোগ থাকবে।
সুহাইল শাহিন আরও বলেন, ‘নারী শিক্ষার বিষয়ে আমাদের এমন নীতির কথা আমরা আফগানিস্তান নিয়ে মস্কো ও দোহা সম্মেলনেও বলেছি। আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোয় হাজারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালু আছে। সেখানে মেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে।’
এদিকে, তালেবান তাদের সরকারে নারীদের যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছে। বাহিনীটির সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য ইনামুল্লাহ সামানগানি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ইসলামিক আমিরাত নারীরা ক্ষতির শিকার হোক, তা চায় না। শরিয়াহ আইন অনুযায়ী সরকারে তাদের উপস্থিতি থাকা উচিত। এখনো সরকারের কাঠামো পুরোপুরি পরিষ্কার নয়, কিন্তু অভিজ্ঞতার আলোকে মনে হচ্ছে, এখানে পুরোপুরি ইসলামিক নেতৃত্ব থাকবে। এতে সব পক্ষেরই যোগ দেওয়া উচিত।