স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৮০ লাখ। তবে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সরকার, জনপ্রতিনিধিসহ সবার এগিয়ে আসতে হবে। তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে না পারলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) কেরানীগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকের চাহিদা, সরবরাহরোধ এবং নিরাময় করতে সরকার তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। আবার এদেশে ফেনসিডিল কিংবা ইয়াবা তৈরি হয় না। এসব মাদক পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে আসছে। ইদানিং ভয়ঙ্কর মাদক এলএসডিও পাশ্চাত্য বা পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে আসছে। ভয়ঙ্কর এ মাদক সেবনে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিজেকেই নিজের জীবন দিতে বাধ্য হয়েছেন। এই মাদক সেবনে মানুষ কখনোই স্বাভাবিক থাকতে পারে না। অথচ এসব মাদকে যুবসমাজ আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাদের সেখান থেকে রক্ষা করতে হবে। না হলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। রাষ্ট্রপরিচালনায় যোগ্য নেতৃত্ব পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়াবে। এজন্য শুধু সরকার কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, পরিবার, জনপ্রতিনিধি সর্বোপরি সব ধরনের জনগণকে মাদকের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসতে হবে।
পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট উদ্বোধন হওয়া ওয়েসিস মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, এই কেন্দ্রটি দেশে মাদকে আসক্ত যেকোনো ব্যক্তিকে আধুনিক উপায়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এখানে আধুনিক সব চিকিৎসার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন। নিরাময় কেন্দ্রের ফলে শুধু কেরানীগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় নয়, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের উপকারে আসবে। পাশাপাশি বেসরকারি ৩৭৩ টি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র আছে। যেখানে ৬ থেকে হাজার আসক্ত রোগীকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া সরকারি ব্যবস্থাপনায় আরও ১ হাজার এ জাতীয় রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে আনতে কাজ করে যাওয়া হচ্ছে। তবে এতেই সন্তুষ্টি থাকলে হবে না। সারা দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৮০ লাখ। সেক্ষেত্রে এত লোককে এসব নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার। এ কারণেই মাদকাসক্ত যেন আপনার পরিবারের কেউ না হতে পারে, সেজন্য তাদের প্রতি সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের মতো মাদকও নির্মূল করা হবে উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক কিভাবে নির্মূল করা যায় সে ব্যাপারে দীর্ঘ কর্মপরিকল্পনা চলছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে যেন মাদক প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সীমান্তরক্ষী বাহিনী সতর্ক পাহারায় রয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়ত মাদক উদ্ধার করা হচ্ছে।