নিউজ ডেস্ক:
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কতটা চরম হতে পারে চলতি বছর তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বিশ্বের অনেক অঞ্চলের বাসিন্দা। পৃথিবীর কোথাও চলতি বছর তীব্র খরা চলছে আবার কোথাও চলছে ব্যাপক বন্যা। এমনকি আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বড় বড় নদীর পানি প্রবাহ কমতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে একদিকে সুপেয় পানির উৎস কমে যাচ্ছে, আরেক দিকে চাষাবাদের জন্য পর্যাপ্ত পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া বিশ্বের ছয়টি বড় নদীর ছবি বিশ্লেষণ করে রোববার সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।
কলোরাডো নদী : যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে খরা তীব্রতা কমার তেমন লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি। খরার প্রভাবে কলোরাডো নদীর তীর শুকিয়ে যাচ্ছে এবং সরু হয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম দুটি জলাধারের মধ্যে একটি হচ্ছে এই নদী। যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি অঙ্গরাজ্য ও প্রতিবেশী মেক্সিকোর চার কোটি মানুষ এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। নদী অববাহিকাকে সুরক্ষিত করার জন্য সরকার বাধ্যতামূলক পানি সংগ্রহ কমিয়েছে এবং রাজ্যগুলোকে অতিরিক্ত কর্ম পরিকল্পনা জমা দিতে বলেছে।
রাইন নদী : সুইস আল্পসে জন্ম নিয়ে রাইন নদী জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের মধ্য দিয়ে উত্তর সাগরে গিয়ে পড়েছে। এটি ইউরোপীয় জাহাজ যাতায়াতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। কিন্তু এই মুহূর্তে, এতে জাহাজ চলাচল মুশকিল হয়ে পড়েছে। অনেক এলাকায় নদীর তলদেশের অংশগুলো উপরে উঠে এসেছে, যার অর্থ যে জাহাজগুলি এই নদী দিয়ে যাবে তাদেরকে বহু পথ ঘুরে যেতে হবে।
পো নদী : এই নদীটি ইতালির পার্বত্য অঞ্চল থেকে বের হয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে গিয়ে পড়েছে। এটি আল্পসের শীতকালীন তুষার এবং বসন্তে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্রতি বছর নদীর চারপাশে বিধ্বংসী বন্যা হয়। কিন্তু এখন, পো নদীর চেহারা বদলে গেছে। উত্তর ইতালিতে শীতকাল শুষ্ক ছিল, তাই তুষার থেকে সামান্য জল প্রবাহিত হয়েছে এবং বসন্ত ও গ্রীষ্ম শুষ্ক ছিল, এই অঞ্চলটিতে গত সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরা সইতে হচ্ছে। নদী এখন এতটাই শুকিয়ে গেছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের একটি বোমা সম্প্রতি এর শুকনো তলদেশ থেকে পাওয়া গেছে।
দানিউব : এটি হল পশ্চিম ইউরোপের দীর্ঘতম নদী এবং জাহাজ চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। নদীটি ১০ দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। রোমানিয়া, সার্বিয়া ও বুলগেরিয়াতে নদীটি ড্রেজিং করা হচ্ছে।