স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের হামজা গ্রামের সড়ক দর্ঘটনায় নিহত এএসআই পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আক্তার (৩৫)কে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাশুড়ী, দেবর ও ননদদের বিরুদ্ধে। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার বিকালে ছোট ছেলেকে ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তারা।আহত জাহানারাকে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সে ভর্তি করে স্থানীয়রা। তিনি বর্তমানে হাসপাতালের তৃতীয় তলার ১৪ নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা গেছে, ১ম স্ত্রী রেহেনা আক্তারের ঔরষজাত অপ্রাপ্ত বয়স্ক দুইটি ছেলে সন্তান রেখে মারা জান। এরপর গত ২০১৭ সালে সাটুরিয়ার বরাইদ ইউনিয়নের মৃত আব্দুস সালামের ছেলের সাথে পারিবারিকভাবে উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নের চান্দু মল্লিকের ছোট মেয়ে জাহানারা বেগম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পরই স্বামী আনোয়ার হোসেনের কর্মস্থল টাংগাইলে ঐ দুই ছেলে সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় সুখে শান্তিতে বসবাস করতে ছিল। গত এক বছর পূর্বে বদলী হয়ে ঢাকার মালিবাগে যোগদান করে। গত ৭/৮/২০১৯ সালে ঢাকার অফিস থেকে বাড়ী যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত আনোয়ারের স্ত্রী জাহানারা বেগম জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। গত ২৬/৮/২০১৯ ইং তারিখে তারই দেবর প্রতারনা করে মিথ্যা কথা বলে আনুতোষিক ও অবসর ভাতা উত্তোলন করার ক্ষমতা অর্পন ও অভিভাবক মনোনয়ন এর প্রত্যয়নপত্রে তার মা মমতাজ বেগমকে অভিভাবক নিযুক্ত করনের জন্য কয়েকটি স্বাক্ষর নেন।
স্বাক্ষরের পর থেকে শাশুড়ী, দেবর ও ননদদের কাছে তার গুরুত্ব কমে যায়। এরপর থেকে শাশুড়ী, দেবর ও দুই ননদ মিলে তাকে বাড়ী ছাড়ার জন্য বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতে থাকে। দিনদিন নির্যাতনের মাত্র এতই বাড়তে থাকে যে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন-উর রশিদকে বিষয়গুলি জানানো হয়। পরে স্থানীয় ভাবে মিমাংশা করার লক্ষ্যে শনিবার বিকালে সভার আয়োজন করা হয়। চেয়ারম্যান বিশেষ কাজে ব্যস্ততায় না আসায় দেবর ও ননদদেরা খিপ্ত হয়ে তার ছোট ছেলেকে ছিনিয়ে নিয়ে তাকে নিজ ঘর থেকে বের করে দড়জায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর তার দেবর ও ননদরা তাকে শারিরিকভাবে নির্যাতন করে আহত করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
প্রতারনা করে দেবর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ায় তিনি গত ০২/১২/২০১৯ ইং তারিখে স্বামী মৃত্যুর আনুতোষিক ও অবসর ভাতা উত্তোলন করার ক্ষমতা অর্পন নিজনামে প্রাপ্তি ও ছেলেদ্বয়ের অভিভাবক নিযুক্ত হওয়ার জন্য ঢাকার সিআইডির এডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল কার্যালয় বরাবর লিখিত আবেদন দাখিল করেন তার স্ত্রী জাহানারা আক্তার। প্রচলিত পেনশন আইনে উক্ত আবেদনের কোন গ্রহনযোগ্যতা নেই মর্মে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। স্ত্রী জাহানারা আক্তারের দাবী শাশুড়ী, দেবর ও ননদদের নির্যাতনের প্রতিকার ও দুই অপ্রাপ্তবয়স্ক আদরের ছেলে সস্তানদের নিয়ে তার স্বামীর বাড়িতে থেকে বাকী জীবন পার করতে চান তিনি।