রফিক খান:
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইছামতি নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছেই বলে স্থানীয়রা জানান। সারা বছর জুড়েই এ নদী থেকে বালু উঠিয়ে কোটি কোটি টাকায় বিক্রয় হচ্ছে বলে জানান তারা।
এনিয়ে স্থানীয় দৈনিক আমার নিউজ পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন করা হয়েছিল। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাটিপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস ইছামতি নদীতে বালু উঠানো বন্ধ করে দিয়ে এসেছিল। কিন্তু তারপরও বন্ধ হয়নি।বরং ভূমি অফিসের লোকজন চলে যাওয়ার পর থেকেই আবারও বীরদর্পে চলছে বালু উত্তোলনের কাজ বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চেগারঘোনা গ্রামের ইছামতি নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার জেগে ওঠা ভূমি ও বাড়িঘর ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলাসহ ঢাকার নবাবগঞ্জ-দোহার বেরিবাধও এই ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের জন্য হুমকিতে রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চেগারঘোনা গ্রামের ইছামতি নদীতে ৩ টি ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উঠানো হচ্ছে।দেখা হল ড্রেজারের এক মালিক জসিম মিয়ার সাথে তাকে বললাম ইছামতি নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু কিভাবে উত্তোলন করছেন। এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি হাসিমুখে স্বাভাবিক ভাবেই বললেন ইছামতি নদীতে আমাদের জমি ভেঙ্গে গেছে সেই জমিতেই ড্রেজার বসানো হয়েছে।তিনি জানান ড্রেজার চালানোর কোন অনুমতি নাই।
সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চেগারঘোনা গ্রামে ইছামতি নদীতে ড্রেজার বসিয়েছেন ড্রেজার ব্যবসায়ী তারিকুল ইসলাম তোতা, হাটিপাড়া ইউনিয়ন ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার বিপ্লব হোসেন, জসিম মিয়া ও মোরশারফ হোসেন নামের ব্যবসায়ীরা ।
ড্রেজার ব্যবসায়ী তারিকুল ইসলাম তোতা মুঠোফোনে বলেন আমাদের সরকারি অনুমতি নাই। আমি ব্যস্ত আছি পরে আপনার সাথে কথা বলবো তিনি জানায়।
স্থানীয় হাতিম আলী মোল্লা বলেন, ৩ টি ড্রেজারই মানিকগঞ্জ সদরের চেগারঘোনা মৌজায়। এগুলো আমাদের জমি ছিল। ইছামতি নদীতে জমিগুলো ভেঙ্গে গেছে। এই ইছামতি নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু বিক্রয় করছে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা। আমাদের কোন টাকা পয়সা দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সারা বছর জুড়েই এই ছোট ইছামতি নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকায় বিক্রয় করা হচ্ছে। প্রশাসন, সাংবাদিকরা আসেন কিন্তু তারপরও বন্ধ হয়নি ড্রেজার। তারা বলেন সম্প্রতি কিছুদিন আগে উপজেলা প্রশাসন কতৃক হাটিপাড়া ভূমি অফিসের লোকজন আসছিল। তারা ড্রেজার বন্ধ করে দেওয়ার কিছুক্ষন পরেই আবারও চলছে বালু উত্তোলন।তারা আরও জানান বিপ্লব মেম্বার ৩ মাসেই ১ টি ড্রেজার দিয়ে বালু উঠিয়ে ১৩ লক্ষ টাকা বিক্রয় করেছে।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন জানান, যদি কেউ অবৈধভাবে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।