শুরু থেকেই করোনাভাইরাসকে ‘একটা সামান্য ফ্লু’ বলে হেলাফেলা করা ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো নিজেই এতে আক্রান্ত হয়েছেন। অথচ, যে ভাইরাস তার দেশে মাত্র পাঁচ মাসেই ৬৭ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়েছে, সেটিকে এখনও পাত্তা দিতে নারাজ এ নেতা।
গত মঙ্গলবার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো। অবশ্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আগেই জানিয়েছিল, বোলসোনারোর শরীরে করোনার উপসর্গ রয়েছে। প্রবল জ্বরে ভুগছেন ৬৫ বছর বয়সী এ নেতা।
তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরেও এ অসুখ নিয়ে নিজের অবস্থান বদলাননি জেইর বোলসোনারো। করেনো পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি নাকি এরই মধ্যেই বেশ ভালো অনুভব করছেন এবং হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের তৃতীয় ডোজ নিয়েছেন।
বিজ্ঞানীদের মতে, ম্যালেরিয়ারোধী হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন করোনার চিকিৎসায় কার্যকর এমন প্রমাণের ঘাটতি থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো বোলসোনারোও ওষুধটিকে মহামারি মোকাবিলার মোক্ষম অস্ত্র বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার এক টুইটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট সমালোচকদের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘যারা হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইনের বিরুদ্ধে দাঁড়ান, কিন্তু এর বিকল্প উপস্থাপন করেন না; তাদের ভালো না লাগলেও বলছি, আমি এটি ব্যবহার করে খুব ভালো আছি এবং ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমি এখনও অনেক দিন বাঁচব।’
বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনায় আক্রান্ত ব্রাজিল। দেশটিতে ইতোমধ্যেই ১৬ লাখের বেশি মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য বোলসোনারো সরকারের সমালোচনা হচ্ছে সারাবিশ্বেই। তবে তাতে থোড়াই কেয়ার করেন প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো। বরাবরই জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার চেয়ে দেশের অর্থনীতির গতি ধরে রাখাই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে তার কাছে। লকডাউন দিয়ে করোনার বিস্তার রোধের পক্ষে মত দেয়ায় দুইজন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বরখাস্তও করেছেন তিনি। ফলে, প্রায় দুই মাস কোনও স্থায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছাড়াই করোনার বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে ব্রাজিলের সাধারণ মানুষদের।