1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১০:০২ পূর্বাহ্ন

শিবালয়ের যমুনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসির ফরমপূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯
  • ১২৩১ বার দেখা হয়েছে

এস.এম আকরাম হোসেন:
এসএসসি পরীক্ষার অতিরিক্ত ফি নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন দুদুকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেছিলেন, ফরম ফিলাপের নামে নির্বাচনী পরীক্ষায় অত্তীর্ন শিক্ষার্থীদের অনৈতিকভাবে পাশ করিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহনে সুযোগ করে দিয়ে অবৈধ অর্থ গ্রহন করলে দুদুক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবে। কিন্তু তারপরও মানিকগঞ্জে শিবালয়ে ২০১৯ সালের এসএসসি ফরম পূরণে যমুনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি টাকা নেওয়ার কোন রশিদও দেওয়া হয়নি। নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা নিয়ে ফরম ফিলাপ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং যারা এ টাকা দিতে পারেননি তাদের এ সুযোগ দেওয়া হয়নি।এসএসসি পরীক্ষায় ফরমপূরনের জন্য সাবজেক্ট প্রতি ৯০ টাকা নির্ধারন করেছে সরকার। এতে করে ১৩ টি সাবজেক্টে কেন্দ্র ফিসহ ১৭৯০ টাকা আসে। কোন অজুহাতে ১৮৫০ টাকার টাকার বেশি নেওয়া যাবে না। অথচ এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ৩ থেকে ৫হাজার টাকা।
জানা গেছে, শিবালয়ের শিমুলিয়া ইউনিয়নে ১৯৯০ সালে যমুনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এ বছরই স্কুলটি এমপিওভূক্ত হিসেবে ঘোষনাও হয়েছে। এই স্কুল থেকে এ বছর ৭৮ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায়
অংশ গ্রহন করবে। এরমধ্যে উপজেলার মোকশেদ আলী একাডেমীর ৪০ জন আর যমুনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৮ জন শিক্ষার্থী এসএসসির পরীক্ষার মানবিক ও বানিজ্য বিভাগে ফরম পূরণ করেছে।

 

এ বিষয়ে হ্যাপি আক্তারের মা জানান, আমার মেয়ে যমুনাবাদ উচ্চ বিদ্যালেয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারছেনা। স্কুলের টেস্ট পরীক্ষার সময় মেয়ের প্রচন্ড জ্বর ও হাতে ইনজেকশন নেওয়ার কেনোলা নিয়ে অনেক কষ্টে পরীক্ষা দিয়েছে। গুরুত্বর অসুস্থ থাকায় স্কুলের নির্ধারিত ১০/১১/১৯ ইং তারিখে ফরমপূরনের দিন যেতে না পারায় এ বছর পরীক্ষা দিতে পারছেনা। পরের দিন পরীক্ষার ফরমপূরনে স্কুলের সংকর স্যারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ৪ হাজার টাকা নিয়ে স্কুলে যেতে বলে। পরের তিন ৪ হাজার টাকা নিয়ে স্কুলে সংকর স্যারের কাছে যান। তিনি জানান প্রধান শিক্ষক সাফ জানিয়ে দিয়েছে তাকে এত কম টাকা দিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবেনা।কারন নির্ধারিত দিন ফরমপূরনে না আসায় এখন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিতে আমাদের অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হবে। আগামী বছর অনেক কম টাকা দিয়ে ফরমপূরণ করতে পারবে।
নাম প্রকাশে অনেইচ্ছুক এই স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী জানান, আমি সবসাবজেক্টে পাশ করার পরও ফরমপূরণে ৩ হাজার টাকা নিয়েছে। সরকার নির্ধারিত টাকার কথা বললে অন্য স্কুল থেকে পরীক্ষা দেওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া ফরমপূরণে অতিরিক্ত টাকার বিষয়ে কাউকে বললে পরীক্ষা দিতে পারবেনা বলে হুশিয়ারী দেন।

যমুনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় ও মুকশেদ আলী একাডেমীর এসএসসি শিক্ষার্থী, নয়ন, আকাশ, ইয়াসমিন, সোনিয়া বিশ্বাস, রাসেল মোল্লা, স্বপ্না,সাইফুল, জহির উদ্দিন, সোমা দেওয়ান সুইটিসহ প্রায় পনের জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে প্রত্যেকের কাছ থেকেই ফরমপূরণে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে । স্যাররা জানতে পারলে পরীক্ষায় হয়রানি করতে পারেন বলে পরীক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন।
যমুনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাজশ্রী জানান, আমি গত বছর এই স্কুল থেকে ২হাজার ছয়শত টাকা দিয়ে ফরমপূরণ করে পরীক্ষা দিয়েছি। আমার কাছে আরোও বেশি টাকা চাওয়া হয়েছিল। গরীব শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্শন করছি এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত কোন টাকা না নিতে পারে তার ব্যবস্থা করা।
এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণে অতিরিক্ত টাকার আদায়ের বিষয়ে মোকশেদ আলী একাডেমীর প্রধান শিক্ষক নার্গিস আক্তার প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে দুই হাজার পাঁচশত টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।

এসএসসি পরীক্ষার ফরমপূরণে অতিরিক্ত টাকার নেওয়ার বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মফিজুর রহমান জানান,এ বছর এসএসসি পরীক্ষার টেস্ট পরীক্ষায় দিয়েছে ৮৫ জন। পরীক্ষার ফরমপূরন করেছে ৭৮ জন। সরকার নির্ধারিত টাকার বাহিরে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া অভিযোগ আছে বললে তিনি জানান এ ধরনের কার্যকলাপ এ প্রতিষ্ঠানে হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সচেতন আছি।

এ বিষয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জহির উদ্দিন মানিক বলেন, আমি প্রধান শিক্ষককে বলেছি সরকার নির্ধারিত টাকা নিয়ে ফরমপূরণ করতে। কোন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বেশি নিয়ে থাকলে ফেরত দেওয়া হবে।

এসএসসির ফরমপূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এফ এম ফিরোজ মাহমুদ বলেন,সরকার নির্ধারিত টাকার বেশি অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোন সুযোগ নেই। যদি কোন বিদ্যালয় বা শিক্ষক অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury