মাহমুদউল্লাহ নেই আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে। তাকে ছাড়াই দল চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। প্রধান নির্বাচক মিনাহজুল আবেদীন নান্নু বুধবার দুপুরে বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের এই দল ঘোষণা করেন।
মাহমুদউল্লাহর বাদ পড়া প্রসঙ্গে মিনহাজুল আবেদীন বলেছেন, ‘মাহমুদউল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, সে আমাদের অনেক ভালো ভালো খেলা উপহার পেয়েছে। আমাদের বর্তমান যে টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট, তিনি এক বছরের যে পরিকল্পনা আমাদের দিয়েছেন, সেটা মাথায় রেখে আমরা এগোচ্ছি। সেই অনুযায়ী টিম ম্যানেজমেন্টের সবার সঙ্গে আলোচনা করে সকলের সম্মতিতে মাহমুদউল্লাহকে বাইরে রাখা হয়েছে।’
এই দল নিয়ে তেমন জল্পনা কল্পনা ছিল না। মিনহাজুল আবেদীনের নির্বাচক কমিটি অনেকটা অনুমিত দলই ঘোষণা করেছে অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য।
ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপ খেলতে না পারা লিটন দাস, কাজী নুরুল হাসান সোহান ও হাসান মাহমুদ দলে ফিরেছেন। জিম্বাবুয়ে সফর ও এশিয়া কাপ মিস করা ইয়াসির আলী রাব্বীও দলে ফিরেছেন। টানা ব্যর্থতায় টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়া নাজমুল হোসেন শান্তও দলে ফিরেছেন। ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে তাকে নেওয়া হয়েছে। তার জায়গায় অন্যরা ভালো করতে না পারায় শান্তকে আরেকবার বাজিয়ে দেখা হচ্ছে।
দল থেকে বাদ পড়েছেন এনামুল হক বিজয়, নাঈম শেখ, পারভেজ হোসেন ইমন, শেখ মেহেদী ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মুশফিকুর রহিম এশিয়া কাপের পরপরই এই ফরম্যাট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
ঘোষিত দল থেকে হাসান ও রাব্বীর প্রথম বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। বাকিরা প্রত্যেকেই বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সাকিব একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরে খেলতে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে সাকিব অধিনায়ক ছিলেন। দুই ম্যাচের দুটিতেই হেরেছিল বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স একেবারেই হতশ্রী। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে নিয়মিত খেললেও মূলপর্বে কেবল জয় একটি। সেটাও ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে। এরপর মূলপর্বে বাংলাদেশের ব্যর্থতার গল্পগুলো অভিন্ন। একাধিকবার প্রতিপক্ষকে হাতের মুঠোয় পেয়েছে। কিন্তু পরাজয়ের সীমানা ডিঙিয়ে জয়সূর্যের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। আরেকটি বিশ্বকাপ দরজায় কড়া নাড়ছে। এবার বাংলাদেশ কেমন করে সেটাই দেখার।
২৪ অক্টোবর বাংলাদেশের বিশ্বকাপের মিশন শুরু হবে বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা দলের সঙ্গে। ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ দলের মুখোমুখি হবে সাকিবের দল। দ্বিতীয় ম্যাচ ২৭ অক্টোবর সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে, প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রিসবেনের গ্যাবায় ৩০ অক্টোবর বাংলাদেশ খেলবে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়নের বিপক্ষে। বাংলাদেশের শেষ দুটি ম্যাচ ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। ২ নভেম্বর অ্যাডিলেডে রোহিত শর্মার দলকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। আর ৬ নভেম্বর একই মাঠে শেষ ম্যাচ খেলবে তারা পাকিস্তানের সঙ্গে।
বাংলাদেশ স্কোয়াড: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, লিটন দাস, ইয়াসির আলী রাব্বী, নুরুল হাসান সোহান, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদ, নাজমুল হোসেন শান্ত ও নাসুম আহমেদ।
স্ট্যান্ডবাই: শরিফুল ইসলাম, শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন ও সৌম্য সরকার।