সাটুরিয়া বরাইদ ইউনিয়ন
স্টাফ রিপোর্টার:
সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ চেয়ারম্যানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগি গৃহবধূ। এ ঘটনায় ধর্ষিতা বাদী হয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনাল (ঢাকা) আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
বাদী ও মামলার সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধূ পেশায় একজন ঔষধ বিক্রেতা। এরই সূত্র ধরে ওই গৃহবধূর ফার্মেসীতে বরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ওই ইউনিয়নের আ’লীগের যুগ্ন সম্পাদক মোঃ হারুণ অর রশিদ ঔষধের দোকানে সময়ে অসময়ে আসা যাওয়া করত। নিজেকে একজন চেয়ারম্যান হিসেবে অনেক ক্ষমতাবান বলে পরিচয় দিত সে। আর দোকানে বসে আকার ইঙ্গিতে গৃহবধুকে প্রলোভন ও অশ্লীন কথা বলত। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ওই গৃহবধূকে জিম্মি করে ধর্ষণ করে। গৃহবধূর ধর্ষনের ঘটনা মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করেন চেয়ারম্যানের ভাগ্নে ও মামলার এক নম্বর আসামী আশিকুর রহমান ওরফে রাশেদুল ইসলাম।
এদিকে চেয়ারম্যানের ভাগ্নে আশিকুর রহমান চেয়ারম্যানের ধর্ষণকৃত ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মোবাইলে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে নগদ টাকা ও ওই গৃহবধুকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করতে থাকে। এমনকি ওই গৃহবধূকে তার যখন প্রয়োজন তখনই তার সাথে থাকতে হবে। বাদী আরো জানায়, এভাবে সে আমাকে ভয় দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মামলার সূত্রে জানা গেছে, বরাইদ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশিদ ও আশিকুর রহমান সম্পর্কে মামা ভাগ্নে। মামলার বাদী ওই গৃহবধূ আরো জানায়, চেয়ারম্যানের ভাগ্নে আশিকুর আমাকে চেয়ারম্যান ও আমার নগ্ন ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কিছুদিন আগে কক্সবাজার নিয়ে একটি হোটেলে আটকিয়ে রেখে তিনদিন ধরে ধর্ষণ করে। অপরদিকে চেয়ারম্যানের ভাগ্নে আমাকে তার ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ ও নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সে।
মামলায় আরো বলা হয়েছে, কক্সবাজার থেকে আসার পর আশিকুর রহমান বরাইদ ইউনিয়নের আা’লীগের নেতা সাইদ ও বরাইদ ইউনিয়স প্রচার লীগের সভাপতি ও নয়াদিগন্তের সাটুরিয়া প্রতিনিধি আব্দুল সালাম সফি এবং রিপনের মোবাইলে আশিকুর কক্সবাজারের নগ্ন ছবি গোপনে ভিডিও ধারন করে আমার সাথে প্রতারণা করে ধর্ষণের দৃশ্য এদের মোবাইলে দিয়ে আরো ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্র। গৃহবধূ আরো জানায় সাংবাদিক আব্দুল সালাম সফিক ওই গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দেয়। তার কুপ্রস্তাবে রাজী না হলে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয় সাংবাদিক শফিক । তবে স্থানীয়রা জানান, বরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের এই বাহিনীর হাতে কত নিরহ অসহায় মানুষ ও নারীদের জিম্মি করে এসব করে আসছে। এরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাই না।
গৃহবধূ জানায়, এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাটুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে চাইলে আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয় চেয়ারম্যান ও তার ভাগ্নে এবং প্রচার লীগের সভাপতি সফি। বরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও তার ভাগ্নের কুকৃর্তি এলাকায় জানাজানি হলে গ্রাম্য শালিস করে ওই গৃহবধূকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয় চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ। পরে বাদী কোন পথ না পেয়ে তার বাবার গৃহে ফিরে যায়।
এ বিষয়ে বরাইদ ইউপি চেয়ারম্যন মোঃ হারুন অর রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে সে ওই গৃহবধূকে ধষর্ণের কথা অস্বীকার করে বলেন, শুনেছি আমার ভাগ্নে তাকে ধর্ষণ করেছে। এ কারণে ওই নারী খারাপ বলে গ্রামে সালিশ করে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
মামলার বিষয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামলাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে পিবিআইয়ের একটি টিম মাঠে কাজ করছে বলে তিনি জানান।সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা। তদন্তে পিবিআই পুলিশ। অন্যন্য আসামীরা গাঁ ঢাকা দিয়েছে।