1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৫ অপরাহ্ন

মানিকগঞ্জে হারভেস্টার নিয়ে সক্রিয় দালাল চক্র,মালিক ও কৃষদের আর্থিক ক্ষতি, জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩
  • ৫৫৫ বার দেখা হয়েছে

এস এম আকরাম হোসেন:

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ৫০% ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষকদের ধান কাটার মেশিন (হারভেস্টার) গাড়ি কিস্তিতে বিতরনে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয় বর্তমান সরকার। এই প্রকল্পের আওয়াতায় মানিকগঞ্জে রয়েছে ১১৪ টি হারভেস্টার আছে । জেলায় বছরে ৩০% কৃষি জমিতে ধানের আবাদ হওয়ায় ভর্তুকি সুবিধা পেয়েছে মাত্র ৫০%। ধান কাটার জন্য শতাংশে ৭০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা রেটও বেধে দেয় প্রশাসন ।  ১১৪টি হারভেস্টার দিয়ে জেলার উৎপাদিত ধান কাটার জন্য যথেষ্ট বলে মনে করেন জেলা হারভেস্টার মালিক সমিতি ।

তবে সমিতির দাবী জেলায় অবাধে ৭০% ভর্তুকির বহিরাগত গাড়ির প্রবেশ করিয়েছে একটি দালাল চক্র। দালাল চক্রটি বিভিন্ন জেলা থেকে কম মূল্যে (৬০ থেকে ৬৫ টাকা রেটে) ভাড়া এনে কৃষকদের নিকট থেকে অধিক মূল্যে ( ১০০ থেকে ১২০ টাকা রেটে) ধান কাটার কাজ করছে । এতে একদিকে যেমন কৃষক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে তেমনি জেলার হারভেস্টার মালিকেরাও বড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে । দালাল চক্রটি জেলার হারভেস্টার গুলোকে মাঠে নামতে বাধা দিচ্ছেন এবং কৃষকদেরও হুমকি দিচ্ছেন তাদের মাধ্যমে ধান কাটার । এমনটাই অভিযোগ করেছেন হারভেস্টার মালিক সমিতি । সম্প্রতি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও কৃষি সম্প্রসারন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তারা ।

নিজ জেলার ধান কাটতে না পারায় কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না তারা। অধিকাংশ জেলাগুলোতেই হারভেস্টার মালিক সমিতি হয়েছে এবং তাদের অনুমতি ব্যাতিত বহিরাগত গাড়ি প্রবেশ নিষেধ । বহিরাগত হারভেস্টার গুলো এলাকায় প্রবেশ বন্ধের সাথে ঋণ মুক্ত হতে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন হারভেস্টার মালিক সমিতি।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবু এনায়েতুর রহমান বলেন, এক জেলার হারভেস্টার অন্য জেলায় যেতে পারবে না এমনটা বিধিনিষেদ নেই ।তবে কৃষকদের নিকট থেকে সরকার নির্ধারিত রেটের অতিরিক্তি অর্থ নেয়ার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন এই কর্মকর্তা ।

 

এবিষয়ে হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের কৃষাণী  আলেয়া বেগম বলেন, আমার ১৭ শতাংস জমি সহ আশেপাশের প্রায় ১১৭ শতাংস জমির ধান কাটতে প্রতি শতাংস  ধান কাটতে ১০০ টাকা করে নিয়েছে  একই এলাকার আবেদ আলী।

 

এ বিষয়ে বাংঙ্গালা গ্রামের দালাল আবেদ আলী বলেন, আমি প্রতিবছরই কৃষকদের ধান কাটার সহযোগিতার জন্য জেলার মেশিন  মালিকদের সাথে কন্টাক করে ধান কেটে দেই। এ বছরও স্থানীয় মো: আবুল হোসেনের হারভেস্টার মালিকের সাথে কন্টাক করে তাকে দেই প্রতি শতাংশে ৮০ টাকা আর আমি নিয়েছে কৃষাণী আলেয়া বেগমের কাছ থেকে ১০০ টাকা।

 

সরজমিনে জেলার বাহির থেকে হারভেস্টার মেশিন আনা শাহিলীর বিল্লাল, বাদশা সহ আরো কয়েকজন দালালের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা সরকারি নির্ধারিত মুল্যে ৭৫ টাকা প্রতি শতাংশ না নিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে ৮০ টাকা থেকে ১১০ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে কৃষকরা বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়ছে।

 

মানিকগঞ্জ জেলা হারভেস্টার মালিক সমিতির সহ সভাপতি মো: আবুল হোসেন বলেন, দালাল চক্রের কারনে আমাদের মেশিনগুলো দিয়ে ঠিকমতো ধান কাটতে পারচ্ছিনা। একদিকে আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। অন্যদিকে দালালরা আমাদের মানিকগঞ্জের মেশিনগুলো দিয়ে ধান কাটতে দিচ্ছেনা। গালা ইউনিয়নের বাংঙ্গালা এলাকার বাহিরের জেলা থেকে আনা রাজিব আমার মেশিন দিয়ে ধান কাটতে গেলেও বাধা দেয় এবং হুমকী ধামকি  প্রদর্শন করে। পরে আমার মেশিন এলাকা থেকে ঘুরিয়ে আনতে বাধ্য হই।

 

এ বিষয়ে দালাল রাজিব বলেন, আমি কোন হারভেস্টার মালিককে ধান কাটতে বাধা ও হুমকী দেয়নি। আমি তাকে অনুরোধ করলে নিজে থেকে চলে গেছে। মানিকগঞ্জের মেশিন মালিকরা বেশি টাকা চায় আর আমরা ৭০/৮০ টাকায় ধান কাটায় আমাদের দিয়ে কৃষকরা ধান কাটায়।

 

মানিকগঞ্জ জেলা হারভেস্টার মালিক সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ হারুন বলেন, বাংলাদেশ সরকারের মহতী উদ্যোগ ব্যহত করছে একদল দালাল চক্র। সরকারের উদ্দেশ্য ছিলো কম খরচে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেয়া। কিন্তু দালাল চক্র উচ্চ রেটে যেমনি খুশী তেমনি করে কৃষকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। আর খুব কম মূল্য দিচ্ছে হারভেস্টার মালিকদেরকে। শুধুমাত্র দালালগুলোই সুবিধা ভোগ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বহু হারভেস্টার মালিক। আমাদের দাবি, যাদের  এক ডিসমাইল আবাদি জমি নেই এবং এক ডিসমাইল জমি ধান রোপণ করেনি, তারা ৫, ১০ গাড়ি এনে ধান কাটছে। অথচ নিজ জেলার হারভেস্টার বসে রয়েছে। তারা টাকা দিয়ে গাড়ি কিনে মাঠে নামাক,দেখি কতটা পারে। দালাল ও চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি আমাদের মানিকগঞ্জ হারভেস্টার মালিকগণ।

 

জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন,মানিকগঞ্জ জেলা হারভেস্টার  মালিক সমিতির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক দ্রুত দালাল চক্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury